স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটে যৌনকর্মীদের আনাগোনা দিন দিন বেড়েই চলছে। ফলে বিপথগামী হচ্ছে হাজার হাজার তরুণ। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগে সিলেটের বাইরে থেকে কতিপয় চক্র এসব যৌনকর্মীদের প্রতিদিন ভাড়া করে নিয়ে আসে। ফলে স্থানীয় যুব সমাজ, হাজার-হাজার স্কুল-কলেজ পড়–য়া তরুণ এসব অনৈতিক কর্মের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। উপজেলার সচেতন মহল ও অভিভাবকরা এসব অনৈতিক কর্মকান্ড ও প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
নগরের বসবাসকারিরা জানান, ভোর হলেই শহর একশ্রেণীর দালালদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ভাড়া করে নিয়ে আসা যৌনকর্মীদের পুনরায় ফেরত এবং নিতে আসতে এই কর্ম ব্যস্ততা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রীবাহী বাসে করে এদের সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। কতিপয় দালালদের দৌরাত্বের সাথে যুক্ত রয়েছে শহরের বেশ কয়েকজন নৈশ্য প্রহরী। সারা দেশের মধ্যে এইড্স’র মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সিলেট জেলা। প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলাগুলো অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধশালী হওয়ায় ভাসমান যৌনকর্মীরা বেশী অর্থের আশায় দালালদের কল পেলেই ছুটে আসে। বর্তমানে যে হারে যৌনকর্মীদের আনাগোনা বাড়ছে তাতে মরণব্যাধি এইডস ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি বিপথগামী হচ্ছে তরুণ ও যুব সমাজ। দীর্ঘদিন থেকে এসব যৌনকর্মীরা ব্যবসা চালিয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে উদাসীন। উঠতি বয়সী তরুণ, যুবকদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে একাধিক জনপ্রতিনিধি যৌনকর্মীদের কলগার্ল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
উল্লেখ্য নারায়ণগঞ্জের টানবাজার উচ্ছেদ এবং বর্তমান আইন শৃঙ্খলা কঠোর থাকায় এসব যৌনকর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাসমান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আগত যৌনকর্মীদের একটি বিরাট অংশ বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার কলোনী ও বাসাবাড়ীতে অবস্থানের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকে বলে জানা যায়। যৌনকর্মীদের স্থানীয় দালালরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তরুণদের হাতে তুলে দেয়। এসব দালালদের একটি অংশ রিক্সা-সিএনজি-লাইটেস চালক থেকে শুরু করে পৌর শহরের ব্যবসায়ী ও কিছু জনপ্রতিনিধি রয়েছে বলে একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়।
বেশীর ভাগ পরিবারের অভিভাবক প্রবাসে থাকায় এসব পরিবারের তরুণরা বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন মিডিয়া জগতের সেরা মডেল থেকে শুরু করে কলেজ পড়–য়া মেয়েরা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় অসংখ্য মেয়ে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়। তথ্য মতে, বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন কলোনিতে এ ব্যবসা চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দালাল বলেন, এখানকার অধিকাংশ খদ্দের অপেক্ষাকৃত তরুণ। যৌনকর্মীরা জানায় এরা দৈহিক মিলনে কনডম নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। বিয়ানীবাজারে যৌনকর্মীদের আনাগো এবং প্রশাসনের নীরব ভূমিকা প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি মোটেই অবগত নই। তবে অনৈতিক কর্মকান্ড দূর করতে পুলিশ প্রশাসনকে বলে রেখেছি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার