Daily Jalalabadi

  সিলেট     সোমবার, ৭ই এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৪শে চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড. ইউনূস-মোদি বৈঠক

admin

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১২:২১ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১২:২১ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
ড. ইউনূস-মোদি বৈঠক

সম্পাদকীয়:
অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষ্যে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি দুজনেই ব্যাংকক গিয়েছিলেন। সেখানেই আলাদাভাবে বৈঠকে বসেন তারা। তাদের এ বৈঠক সফল হয়েছে বলা যায় এবং এ সাফল্য আগামী দিনে দুদেশের সম্পর্কোন্নয়নে জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। প্রসঙ্গত গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সফল হওয়ার পর দুদেশের সম্পর্ক অনেকটা শীতল হয়ে পড়েছিল। এই শীতল সম্পর্ক এখন থেকে উষ্ণ হবে, আশা করা যায়।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার আলোচনায় বেশ কিছু ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে। এর একটি হলো, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত চেয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিষয়টি অনেকদিন থেকেই ঝুলে আছে। এখন আমরা আশা করতে পারি, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আলোচনায় তিস্তা, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়ন, সীমান্ত হত্যা ইত্যাদি বিষয়ও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমরা আশা করব, বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের এ উদ্বেগ নিরসনে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করবে। বস্তুত গণ-অভ্যুত্থানের পর সংখ্যালঘুদের ওপর বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে স্বার্থান্বেষীরা। এসব ঘটনা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটানো হয়নি, রাজনৈতিক বৈরিতাই ছিল কারণ। এ ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে অবশ্যই। বাংলাদেশ মূলত শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সহাবস্থানের দেশ। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে পুরো চিত্র বোঝা যাবে না।

বিমসটেক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দ্রুত নির্বাচন আয়োজনই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার। জাতি একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় রয়েছে। সরকার সংস্কারের কাজগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও ফিরে আসবে।

বিমসটেক সম্মেলন শেষে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বিমসটেকের চেয়ারম্যানশিপ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এতে জাতি হিসাবে আমরা গর্বিত। ড. ইউনূস বিমসটেকের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় এ সংস্থা ভবিষ্যতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক ও কারিগরি ক্ষেত্রে আরও অর্থপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এক কথায় বলা যায়, বিমসটেক সম্মেলন ও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক বাংলাদেশের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। শুধু ভারত নয়, আমরা বিমসটেকের সব সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাব, এ কথায় বাড়াবাড়ির কিছু নেই।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন