বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে নেমেই চলে যান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনে। সেখানে গাড়ি থেকে নেমেই উপদেষ্টার সম্মানে লালগালিচা ও সাজসজ্জা দেখে ক্ষিপ্ত হন তিনি। এ সময় সব তুলে ফেলার নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, শতবার বলার পরও এসব তোষামোদি বন্ধ হচ্ছে না। এসব করতে গিয়ে আসল কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় নিয়মানুযায়ী সালামি দেওয়ার রীতি থাকলেও তিনি তা নেননি। পরে থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের পরিবারের খোঁজখবর নেন। পুলিশ সদস্যদের থাকার জায়গা ও খাবারের খোঁজখবর নেন উপদেষ্টা। প্রায় ৩০ মিনিট পর বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, সারা দেশে ঘুরে যা দেখছি তাতে পুলিশের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, থাকার জায়গা নেই, গাড়ি নেই, খাবারেরও ঘাটতি আছে। শুধু তাদের কাছে সেবা চাইলেই হবে না, তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণেও সোচ্চার হতে হবে। আন্দোলনের পর থেকে পুলিশের অনেক গাড়ি, থানা পুড়েছে। একটি নতুন গাড়িও কিনতে পারিনি, অর্থ বরাদ্দ হয়েছে ধীরে ধীরে সেগুলোর ব্যবস্থা হবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদেরও এসব সীমাবদ্ধতার বিষয়ে লিখতে হবে। পুলিশের থাকা ও খাবারের উন্নতি দ্রুত করা প্রয়োজন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকে চিঠি দেওয়ার পর কোনো অগ্রগতি আছে কিনা- এমন প্রশ্নের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, নতুন কোনো অগ্রগতি নেই।
সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে, আরও হবে।
তবে বিভিন্ন স্থানে আসামি ছিনতাই ও মবজাস্টিস ইস্যুতে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘটনা ঘটছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে যেখানেই আসামি ছিনতাই হচ্ছে পরে আবার তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। যদিও নানা সংকট থাকায় অ্যাকশন নিতে দেরি হয়; তবে কেউ পার পাবে না।
মবজাস্টিস এখনো পুলিশ ভয় পায় বলেই কি ঠেকানো যাচ্ছে না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পুলিশ ভয় পায় না। আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমন অপকর্ম করে কেউ আর ছাড় পাবেন না।
এ সময় সাম্প্রতিক হামলা ও লুটের ঘটনা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা দেখেছেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যারা জড়িত ছিল; তাদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেখানে কে কার লোক; সেটা দেখা হচ্ছে না।
গত ৫ আগস্ট থেকে পুলিশের যে পরিমাণ অস্ত্র লুট হয়েছে তার কি পরিমাণ এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে? এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী অস্ত্র উদ্ধার সম্ভব হয়নি, যেটা হয়নি সেটা বলা যাবে না। তবে চেষ্টা চলছে।
লুট হওয়া অস্ত্র নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঝুঁকি তো অবশ্যই আছে। অস্ত্র বাইরে থাকবে ঝুঁকি থাকবে না, তা তো হয় না। তবে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মুশফেকুর রহমান ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার রেজাউল করিম।