
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির উদ্যেগে ১৪০ তম আর্ন্তজাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস মহান মে দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির ২নং বার লাইব্রেরী হলে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায় ও বিশেষ অতিথি হিসেবে সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট শাহপরান থানা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ সরকার, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সিলেট জেলা রাইস মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহজাহান মিয়া, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান আলী, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিন রাজু, স’মিল শ্রমিক সংঘ সিলেট সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি হজর আলী, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সমিল শ্রমিক সংঘের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, মীরের চক শ্রমজীবী সংঘের আহবায়ক আলী আহমদ।
সমাবেশ স্থলে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের বেসিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা রাইস মিল শ্রমিক ইউনিয়ন সহ শরীক সংগঠন জাতীয় ছাত্রদল, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি সহ বিভিন্ন থানা/উপজেলা ও বেসিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ মিছিল সহকারে অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশ শেষে এক লাল পতাকা র্যালি কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার হয়ে পুনরায় সভাস্থলে এসে শেষ হয়।
বক্তারা বলেন ১৮৮৬ সাল ও তার পূর্ববর্তী সময়ের শ্রমিকদের ধারাবাহিক সংগ্রাম, ধর্মঘট আর বুকের তাজা রক্তঝরা লড়াইয়ের ফলশ্রুতিতে শ্রমিকশ্রেণির সামাজিক স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী ৮ ঘন্টা কাজ, ৮ ঘন্টা বিনোদন ও ৮ ঘন্টা বিশ্রামের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয় মহান মে দিবস। মে দিবস হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করার দিন। এই দিনে শ্রমিক শ্রেণির সংহতি সংগ্রাম ও শপথের দিন। মে দিবস হচ্ছে রক্ত পিচ্ছিল আঁকাবাকা পথ ধরে অর্জিত শ্রমিকশ্রেণির নিজস্ব দিবস। রক্তে রঞ্জিত এই দিনের চেতনা ভুলিয়ে দিতে সাম্রারাজ্যবাদ ও তার দালাল আপোসকামী সুবিধাবাদীরা মালিক শ্রমিক একতার কথা বলে মে দিবসের তাৎপর্যকে বিভ্রান্ত করে চলছে। এবারও মে দিবসে সরকার মালিক শ্রমিক একতার কথা বলে মূলত শ্রমিক শ্রেণির প্রকৃত মুক্তির সংগ্রামকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত মালিক-শ্রমিক তার শ্রেণিগত অবস্থানের কারণে কখনো এক হতে পারেনা। তাই মে দিবসের অজেয় শিক্ষাকে উর্দ্ধে তুলে ধরে মে দিবসের বিপ্লবী চেতনাকে ধারণ করে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে আগামী দিনের শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের আন্দোলনের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে।
নয়াউপনিবেশিক, আধাসামন্তবাদী বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত সামগ্রিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্য ও প্রতিপক্ষ চীন-রাশিয়া বাংলাদেশকে স্ব স্ব পক্ষের যুদ্ধে সম্পৃক্ত করতে ষড়যন্ত্র চক্রান্তে লিপ্ত। এ প্রেক্ষিতে দালাল স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনাকে ৫ আগস্টে শহুরে ছাত্র-মধ্যবিত্তদের গণআন্দোলনে পট পরিবর্তণে ক্ষমতায় আনে মার্কিনের বিশ্বস্ত দালাল ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে। এর ফলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অবস্থান অগ্রসর হয়, প্রতিপক্ষ চীন রাশিয়া স্বীয় অবস্থান ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকে এবং সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারতের অবস্থান দূর্বল ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই সরকার ক্ষমতায় এসে খুনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলের শ্বেতপত্র প্রকাশ করে ৭২-এর সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করে যে তৎপরতা চালাচ্ছে তা মার্কিন পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করবে। এতে দেশ, জাতি ও জনগণের কোন লাভ হবে না। এবার মে দিবস এমন এক সময়ে পালিত হচ্ছে যখন সরকার মায়ানমারকে মানবিক করিডোর প্রদানের চুক্তি করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পাঁয়তারা চলছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রাম ব্যতিত কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না তাই সকল শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে তার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অগ্রসর করে নিতে হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার