
স্টাফ রিপোর্টার:
নাম তার কুলসুমা বেগম, গোলাপগঞ্জে তার বাড়ি। দুই ছেলেকে নিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক বস্তিতে। কিন্তু তবু শেষ রক্ষা হলোনা। শুক্রবার রাত প্রায় ১১টার দিকে ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। সঙ্গে ছেলেরাও।
তারা পালিয়েছিলেন গত ৩০ এপ্রিল মধ্য রাতের পর থেকে। ওই কালরাতে কুলসুমার আপন ভাইপো একই গ্রামের মাওলনা আব্দুল আলীমের ২৭ বছর বয়সী ছেলে ফাহিম আহমদকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেছিল কুলসুমা বেগম ও জিলাল উদ্দিনের ছেলে সাঈদ আহমদ। পরদিন সকাল ৮টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
পুত্রশোকে কাতর আব্দুল আলীম গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় পরদিন বোন কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাঈদ আহমদ ও মাহিদ আহমদকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
মামলা এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, কুলসুমা ও মাহিদ নিহত ফাহিমকে ধরে রেখেছিলেন আর সাঈদ উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেছিল। তিনি এটাকে একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই উল্লেখ করেছেন।
এরপর থেকে মা ও তাই দুই ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলনা। দিন যায় রাত যায়, শোকের বুঝা বাড়তে থাকে মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারে। মাত্র দুই ছেলে ও এক মেয়ে তার। এরমধ্যে আদরের ছোটো ছেলেটা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলো আপন বোন ও তার সন্তানদের হাতে, যাদের ত্যাজ্য করে দেয়া হয়েছিল এবং এখানে সেখানে কলোনিতে ভাড়া থাকার যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে।
আবার পুলিশ বা গোয়েন্দারাও তেমন একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। ধরতে পারছিলেন না তাদের।
এভাবে ঘটনার প্রায় ৯দিন পর শুক্রবার রাতে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালায় ব্রাম্মনবাড়িয়া সদরে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানো সেই অভিযানে মাসহ দুই ছেলেকে পাওয়া যায় সেখানকার একটা কলোনিতে। তারপর তাদের ধরে নিয়ে আসা হয় গোলাপগঞ্জে। ততক্ষনে অবশ্য শনিবার সকাল।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া গোলাপগঞ্জ থানার এসআই সাঈদ জানিয়েছেন, দুই ছেলেসহ কলসুমা বেগমকে আদালতে তোলা হয়েছিল এবং পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে নিহত ফাহিমের শোকে কাতর পরিবারের সদস্যরা এমন খবরে সন্তোষ প্রকাশ করে আসামীদের ফাঁসির দাবি জানানোর পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কারো ইন্ধন আছে কি না তাও খুঁজে বের করার দাবি জানান।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার