
স্টাফ রিপোর্টার:
স্টোন ওয়াশিংয়ের অনুমতি নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় চালানো হচ্ছে অবৈধ স্টোন ক্রাশিং কার্যক্রম। এতে ধুলায় ঢেকে যাচ্ছে বসতবাড়ি, গাছপালা, এমনকি রাস্তাঘাটও। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি এবং ফুসফুসে ক্ষতিকর কণা জমে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্রমজীবী মানুষ।
বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় রাস্তার দুই পাশে বিস্তৃতভাবে চলে পাথর ভাঙার কার্যক্রম। স্টোন ক্রাশার মেশিনের বিকট শব্দ ও উড়তে থাকা ধুলাবালির কারণে ধুলোবালিতে ঢেকে যাচ্ছে পুরো এলাকা। শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন নিয়মিত। স্থানীয়দের অভিযোগ—এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই তারা বাধ্য হচ্ছেন বসবাস করতে।
ভোলাগঞ্জ, জাফলং, জৈন্তাপুর এবং সিলেট সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা এখন ‘পাথর ভাঙার কল’ আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি জাফলং এলাকা পরিদর্শন করে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এসব অবৈধ স্টোন ক্রাশার বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেন।
পরিদর্শনের পরপরই প্রশাসনের অভিযানে একের পর এক অনিয়ম উঠে আসে। সিলেট সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াত জানান, মাত্র কয়েকদিনে ১৩০টি অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
তবে, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দাবি—তাদের ব্যবসা বৈধভাবে পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হোক। এজন্য আলাদা জোন নির্ধারণ করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কার্যক্রম চালানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আলী বাবুল বলেন, “আমরা বৈধ পথে ব্যবসা করতে চাই। এজন্য সরকার যেন উপযুক্ত জায়গায় ক্রাশিং জোন নির্ধারণ করে।”
এদিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “অনেকে স্টোন ওয়াশিংয়ের অনুমতি নিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অবৈধভাবে পাথর ভাঙছে। এসব অনিয়ম রোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
পরিবেশবাদীরা বলছেন, শুধু ক্রাশার নয়, পর্যটন এলাকা ও পরিবেশ রক্ষায় রাতের আঁধারে চলা পাথর চুরিও বন্ধ করতে হবে কঠোর নজরদারির মাধ্যমে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার