নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটে স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ঝরে পড়ছে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। গেল পাঁচ বছরে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের সংখ্যা কমেছে ২১.৬২ শতাংশ। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার জন্য বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করছেন শিক্ষাবিদরা। এ অবস্থার উন্নতি না হলে সিলেটে শিক্ষার হার কমতে থাকবে বলে মনে করছেন তারা।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের তথ্য মতে, ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৩ জন। যার মধ্যে ৫৩ হাজার ৩৩২ জন ছেলে ও ৬৬ হাজার ২২১ জন মেয়ে। এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ২১৯ জনে। এর মধ্যে ছেলে ৪১ হাজার ৮০৪ জন ও মেয়ে ৬০ হাজার ৪১৫ জন। পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে কমেছে ১৪.৫০ শতাংশ। যার মধ্যে ছেলে পরীক্ষার্থী কমেছে ২১.৬২ ও মেয়ে ৮.৭৭ শতাংশ।
শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের মতে, এসএসসি পরীক্ষার্থী কমে যাওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্কুলের পরিবর্তে মাদরাসা বেছে নেওয়া, হাওর ও চা বাগান এলাকায় পড়ালেখার সুযোগের অভাব, পাথর কোয়ারি এলাকায় শিশু শ্রম বেড়ে যাওয়া, জন্মহার কমে যাওয়া অন্যতম।
সিলেটের প্রান্তিক শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে সিলেটের হাওরাঞ্চল ও চা বাগান এলাকার মানুষের জীবনমান আরও নিম্নমুখী হয়েছে। এসব এলাকার দরিদ্র পরিবার ছেলে সন্তানদের মাদরাসায় পাঠিয়ে দেন এবং মেয়েরা থেকে যাচ্ছে শিক্ষার আলোর বাহিরে। মাদরাসায় অনেকটা ফ্রিতে পড়ালেখা করা যায়। তাই স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মাদরাসায়।
ড. শাকিল আরও জানান, সিলেটের চা শ্রমিকদের এখনো মজুরি ও রেশনের জন্য আন্দোলন করতে হয়। নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়েনি। তাই আগে স্থানীয় স্কুলগুলোতে তাদের সন্তান পাঠালেও এখন এই হার কমেছে। পাথর কোয়ারিগুলোয় আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে শিশুশ্রম। দুই বছর আগে বন্যায় অনেক পরিবার সহায়- সম্বল হারিয়েছে। এসব পরিবারের শিশুরা অনেকেই স্কুলমুখী হয়নি।
সিলেট পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবীর খান জানান, সিলেটে শিক্ষিত ও সচেতন পরিবারে জন্মহার কমেছে। যে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীও কমছে। এ ছাড়া মানুষের মধ্যে ফের বিদেশগামী মনোভাব তৈরি হওয়ায় পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ কমেছে বলে অনুমান করা যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আব্দুল খালিক
আইন-উপদেষ্টা: ব্যারিস্টার ফয়সাল দস্তগীর, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।
উপ-সম্পাদকঃ ফুজেল আহমদ
প্রকাশক কর্তৃক উত্তরা অফসেট প্রিন্টার্স কলেজ রোড, বিয়ানীবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও শরীফা বিবি হাউজ, মেওয়া থেকে প্রকাশিত।
বানিজ্যিক কার্যালয় :
উত্তর বাজার মেইন রোড বিয়ানীবাজার, সিলেট।
ই-মেইল: dailyjalalabadi@gmail.com
মোবাইল: ০১৮১৯-৫৬৪৮৮১, ০১৭৩৮১১৬৫১২।