Daily Jalalabadi

  সিলেট     রবিবার, ৩রা আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১৯শে শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

admin

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫ | ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৫ | ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

স্টাফ রিপোর্টার:
হামাস জানিয়েছে, একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণে সম্মত হবে না। গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান দাবির জবাবে তারা এটি জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের একটি মন্তব্যের জবাবে তারা এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

উইটকফ বলেছিলেন, হামাস তাদের অস্ত্র সমর্পণে ইচ্ছে প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েল সংঘাত অবসানের জন্য যেসব গুরুত্বপূর্ণ শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো হামাসের নিরস্ত্রীকরণ। যুদ্ধবিরতির ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার পরোক্ষ আলোচনা গত সপ্তাহে থমকে গেছে।

গত কয়েকদিনে আরব সরকারগুলো নিরস্ত্রীকরণ ও গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়ার জন্য হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে ফ্রান্স ও কানাডাসহ পশ্চিমা কিছু দেশও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।

যুক্তরাজ্য বলেছে, ইসরায়েল সেপ্টেম্বরের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ না করলে তারা এটি করবে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষিত হামাস বলেছে, জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র না পাওয়া পর্যন্ত তারা তাদের ‘প্রতিরোধ ও অস্ত্র’ এর অধিকার সমর্পণ করবে না।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ এর লে: জেনারেল ইয়াল জামির শুক্রবার সতর্ক করে বলেছেন, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনা ব্যর্থ হলে গাজায় লড়াইয়ের কোনো বিকল্প তাদের হাতে থাকবে না।

জিম্মিদের একজন এভিয়াতার ডেভিড এর পরিবার এক বিবৃতিতে তাকে ক্ষুধার্ত রাখার অভিযোগ করেছে। তারা ইসরায়েল সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাকে রক্ষার জন্য সম্ভাব্য করণীয় সব করার আহবান জানিয়েছে।

স্টিভ উইটকফ এখন ইসরায়েল সফর করছেন। ওদিকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো গাজায় মনুষ্য সৃষ্ট ব্যাপক অনাহারের বিষয়ে সতর্ক করেছে। তারা এজন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। ইসরায়েল অবশ্য বলছে, সেখানে ‘অনাহার’ নেই এবং ত্রাণ বিতরণে কোনো বিধিনিষেধও নেই।

শনিবার উইটকফ গাজায় যারা এখনো জিম্মি আছে তাদের পরিবারের সাথে তেল আবিবে দেখা করেছেন।

অনলাইনে থাকা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভের জন্য পরিচিত একটি চত্বরে তিনি পৌঁছানোর পর জিম্মিদের পরিবার ও তাদের সমর্থকরা তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

উইটকফ বলেছেন, আংশিক চুক্তি না করে সংঘাত অবসানের দিকে দৃষ্টি দেওয়া এবং সব জিম্মিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা উচিত।

তিনি বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর সাথে দেখা করেছেন। শুক্রবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক সমালোচিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।

জাতিসংঘ সবশেষ জানিয়েছে, গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ৩৭৩ জন্য ফিলিস্তিনি খাবার আনতে গিয়ে খুন হয়েছে। এর বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ এর ত্রাণ বিতরণে কেন্দ্রে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছে।

ইসরায়েল এসব কেন্দ্রের কাছে নৈরাজ্যের জন্য হামাসকে দায়ী করেছে। তারা বলেছে তাদের সৈন্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের গুলি করেনি। হামাস ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। এতে ১২০০ নিহত হয় এবং তারা ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

জবাবে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। এছাড়া ৯৩টি শিশুসহ ১৬৯ জন অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা গেছে বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন