
এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া সহ গোটা পূর্ব সিলেটের সাধারণ জনগণ এই রাস্তাটি ব্যবহার করে থাকেন। উপজেলা সমূহের অধিকাংশ জনগণ প্রবাসে বসবাস করেন। ৭৫% জনগোষ্টী পশ্চিমা বিশ্ব তথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালী মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের অনেক দেশে বসবাস করে থাকেন। তাঁহাদের কষ্টার্জিত টাকা প্রেরণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রপতিষ্টায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করিতেছেন। নিয়মিত তাঁহারা নাড়ীর টানে ও আত্মীয়স্বজনকে দেখিতে তাহাদের ছেলে মেয়েকে নিয়ে নিজ জন্ম ভূমিতে আসিতে চান। কিন্তু রাস্তা ঘাটের করুন অবস্থা দৃষ্টে ছেলে মেয়েরা বাংলাদেশে আসিতে অনিচ্ছুক। শুধু জুলাই মাস ২০২৫ সালে প্রবাসীরা প্রায় ৩০ হাজার কোট টাকার রেমিটেন্স পাটিয়েছেন। কিন্ত তাঁহাদের কল্যানে কি সরকার এগিয়ে আসিতেছে? না, সিলেট-শেওলার রাস্তাটি ৪ লেনে উন্নিত করার জন্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ হইয়াছে। উক্ত রাস্তাটি বাস্তবায়ন হলে, এসব উপজেলার সাধারন জনগণ সিলেটে আধুনিক চিকিৎসা সেবা, প্রবাসে যাতায়াত তথা সিলেট আন্তর্জাতিক ওসমানী বিমান বন্দর ব্যবহার করার জন্য নিজ বাড়ি থেকে সামান্য সময়ে সেবা গ্রহণ করা সম্ভব। অবকাটামো উন্নয়নে বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ শেওলা স্থলবন্দর থেকে সহজে বালু, পাথর এর ব্যবসা সম্প্রসারন করা সম্ভব।অযথা চিকিৎসা সেবা নিতে বা ফ্লাইটে যেতে সিলেট অবস্থান করার কোন প্রয়োজন নেই। সিলেটের জনগণ আর্থিক সচ্চলতার জন্য কোন অনুদান চান না। তাঁহাদের দাবী হল রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন, বিদ্যুৎ বিতরণ, গ্যাস সেবা নিশ্চিত করণ হলে-ই তাঁহারা দারুন খুশি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা এসব চাহিদা পূর্ন হলে রেমিটেন্স এর পরিধি ব্যাপক ভাবে বিধি পাবে। কিন্তু রাস্তা ঘাটের চরম অ-ব্যাবস্থা, যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভংগুর, মান্দাতার আমলে জ্বালানি ব্যবস্থা বিদ্যমান। নিজস্ব এলাকায় গ্যাস উৎপাদিত হলেও নিজের এলাকার জনগণ কিন্তু সরকারের বৈষম্যের শিকার। কোন সংগঠন কর্তৃক প্রবাসী ব্যক্তিকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হলে, সরকারের-ই কর্তাব্যক্তিকেই প্রধান অতিথি করা হয়। কর্তাব্যক্তি আবেগ আপ্লুত হয়ে সংবর্ধীত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এসব রেমিটেন্স যুদ্ধাদের কাছে জাতি চীরকর্তজ্ঞ। অথচ অনুষ্টান শেষে সেই প্রবাসী ব্যক্তি তাঁহার সাথে বৈধ কোন সহযোগীতা চাহিলে তা কিন্তু সেই কর্তাব্যক্তি সহযোগীতা দিতে অক্ষম। এই দ্বৈত চতিত্রিক গুনাবালীর জন্য আমরা সাধারন জনগনকে কটুকথা শুনতে হয়। কর্তাব্যক্তিকে না পেয়ে সংবর্ধিত ব্যক্তি ঢালাও ভাবে বলে থাকেন “মুনাফিক”। প্রবাসী তথা পূর্ব সিলেটের উপজেলা সমূহের সাধারন জনগনের প্রানের দাবী হচ্ছে এসব উন্নয়নে সরকারকেই সহযোগীতায় এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে সিলেট-শেওলা স্থলবন্দর ৪ লেনের রাস্তাটি অনতি বিলম্বে বরদ্ধকৃত ৪ হাজার কোট টাকা বাস্তবায়নে জরুরী ভিত্তিতে ব্যাবস্থা গ্রহণ অতীব জরুরী। স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ৭টি উপজেলার মধ্যে শুধু বিয়ানীবাজারে প্রায় ৩২টি আর্থিক প্রতিষ্টান ব্যাংক, বীমার শাখা প্রশাখার অবস্থান। উক্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াত কালে প্রতিদিন গাড়ি দূর্ঘটনা হয়ে থাকে। অনেক মানুষের প্রাণ হানি হচ্ছে এবং অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। ৪ হাজার কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়নে প্রশাসনিক কোন ষড়যন্ত্র বর্নিত উপজেলা সমূহের সাধারন জনগণ কোন অবস্থাতেই মেনে নিবে না। দেশে বিদেশে রাস্তা বাস্তবায়নে আন্দোল সংগ্রাম গড়ে তুলা হবে। সরকার প্রস্তাবিত রাস্তাটি জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বাস্তবায়নে জরুরী ভিত্তিতে এগিয়ে আসবেন। সাধারণ জনগণ জেনে গেছেন, একনেকে অনুমোদিত বিগত সরকারের বিদেশীদের সাথে কোন চুক্তিই বাতিল করা হয়নি। খুড়া যুক্তি দিয়ে এ অঞ্চলের জনগনকে আন্দোলনে নামানোর চেষ্টা করিবেন না। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম শহীদ হন, বিয়ানীবাজারের শ্রমিক নেতা মনু মিয়া, ২০২৪ সালে গনভ্যত্থনে সিলেট বিভাগের মধ্যে প্রথম শহীদ হণ বিয়ানীবাজার উপজেলার সাংবাদিক এটিএম আবু তুরাব। সুতরাং এ অঞ্চলের জনগণ অধিকার আদায়ে সোচ্ছার। সময়ের দাবী, সব কুট কৌশলকে পাশ কটিয়ে সিলেট-শেওলা স্থলবন্দরের জন্য বরাদ্ধকৃত ৪ হজার কোটি টাকা ব্যয় করে উন্নয় নিশ্চিতে করুন। নতুবা কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে সরকারকে-ই।
লেখক, সভাপতি- সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার, সিলেট।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার