
নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে কোনো ধরনের হামলা চালাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। শর্ত হিসেবে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, যদি ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা করতে চায়, তবে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মেয়াদের শেষ দিকে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে শর্ত ছিল, এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের আগে অবশ্যই মার্কিন সামরিক কমান্ডের অনুমতি নিতে হবে ইউক্রেনীয় সেনাদের।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন থেকে চার মাসে একাধিকবার রাশিয়ার ভেতরে হামলার জন্য এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল ইউক্রেনীয় সেনারা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও মার্কিন সামরিক কমান্ড কোনোবারই সে অনুমতি দেননি।
ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দু’টি কারণে ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে হামলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রথমত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে সংঘাত কমানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, তার প্রশাসন বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তাদের মতে, ইউক্রেন যদি রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা শুরু করে, তবে যুদ্ধাবসানের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, কৃষ্ণসাগরের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং ন্যাটোতে যোগদানের আবেদনকে ঘিরে টানাপোড়েনের পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। টানা সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইতোমধ্যেই উভয় পক্ষের লাখো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখনই তিনি আন্তর্জাতিক অগ্রাধিকারের তালিকায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবসানকে প্রথম সারিতে রাখার ঘোষণা দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত মে মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনায় বসে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে আট মাস ধরে একাধিক ফোনালাপের পর গত ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। তিন দিন পর, ১৮ আগস্ট হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
পুতিন, জেলেনস্কি এবং ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শিগগিরই অবসানের দিকে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 996 বার