
স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথরে ফের পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। কয়েকশ’ কোটি টাকার পাথর লুটের কারণে শ্রীহীন হয়ে পড়া এই পর্যটনকেন্দ্রটি কিছুটা হলেও আগের রূপে ফিরতে শুরু করেছে। কঠোর অভিযান চালিয়ে লুন্টিত পাথর উদ্ধারের পর প্রতিস্থাপনের খবরে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় পর্যটকরা। আসছেন দেশের অন্যান্য এলাকার প্রকৃতিপ্রেমীরাও।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সরেজমিনে সাদাপাথর ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের নিরবতার অবসান ঘটিয়েছেন কয়েকশ’ পর্যটক। পাথর লুটের পর ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা থাকলেও সেদিন ছিল ব্যতিক্রম। পর্যটকরা আসছেন এবং নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কেউ কেউ পাথর বিছানো ধলাইয়ের স্বচ্ছ জলে সাঁতরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন। আবার কেউবা ব্যস্ত ছবি তোলায়।
তবে লুটপাটের আগে যারা ঘুরে গিয়েছিলেন, ফের সাদাপাথরে বেড়াতে এসে তাদের মাঝে ছিল আফসোস। অনেকের মতে, সাদাপাথরের আগের সৌন্দর্য্য আর নেই। আগে পর্যটনকেন্দ্রটিতে অনেক বেশি পাথর ছিল। এখন কমেছে। ফলে সৌন্দর্য্যও কমেছে। আর যারা প্রথমবারের মতো ঘুরতে এসেছেন তাদের চোখে মুখে ছিল বেশি উচ্ছ্বাস। যে পরিমাণ সাদাপাথর আছে, তাতেই মনজুড়ানো উপভোগ তাদের।
পাথর লুটের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। উদ্ধার করা হয় অন্তত সাড়ে ৫ লাখ ঘনফুট পাথর। সেগুলো আবার প্রশাসনের উদ্যোগে ধলাইয়ের বুকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অভিযান এখনো চলছে। এবার সিলেটের জেলা প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, সাদাপাথর এলাকাটিকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এমন ঘোষণায় খুশি পর্যটকরা।
সিলেটের সবকটি পর্যটনকেন্দ্রই নদী, পাথর আর পাহাড়ের মিশলে গড়ে ওঠেছে। এগুলো সুরক্ষায় সরকারকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এই প্রথম সপরিবারে প্রবাসী মাহিদুল ইসলাম সাদাপাথর ঘুরতে এসেছেন। তার কিশোর ছেলেটিকে নিয়ে ধলাইয়ের স্বচ্ছ জলে সাঁতার কাটতে কাটতে বললেন, এত বড় লুটপাটের পর এই যদি হয় সাদাপাথরের রূপ, তাহলে না জানি আগে কত সুন্দর ছিল। আমরা খুব খুশী। যখনই সুযোগ আসবে, তখনই সাদাপাথর দেখতে আসবো- এমন প্রস্তাব দিয়ে বসেছেন আমার ছেলে ও স্ত্রী। অবশ্যই আবার আসব। সরকার আরও আন্তরিক হবেন। স্থানীয়রা সচেতন হবেন- এমন প্রত্যাশা আমাদের।
এদিকে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সিলেট (টোয়াস) এর আহ্বায়ক হুমায়ূন কবীর লিটন বলেন, সাদাপাথরের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। মানুষের হাতে পাথর প্রতিস্থাপন আর প্রকৃতির সুনিপুন প্রতিস্থাপনে অনেক পার্থক্য।
তিনি বলেন, সাদাপাথর থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নিয়ে সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন হতে হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার