Daily Jalalabadi

  সিলেট     বুধবার, ৩রা সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১৯শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষককে ‘পেটানোয়’ প্রাথমিক স্কুল ঘেরাও করে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

admin

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২:৪১ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২:৪১ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
শিক্ষককে ‘পেটানোয়’ প্রাথমিক স্কুল ঘেরাও করে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা :
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সহরবানু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারেছা আক্তার আঁখিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে খান্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারিয়া আক্তার পিংকির বিরুদ্ধে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
এক পর্যায়ে খান্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে সহরবানু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) উপজেলার গৌরীপুর-বেখৈরহাটি আঞ্চলিক সড়কের দাড়িয়াপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও গৌরীপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে গৌরীপুর থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে একই অটোরিকশায় ওঠেন আঁখি ও পিংকি। পরে সিটে বসা নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কের জেরে আঁখিকে চড়-থাপ্পড় মারেন পিংকি। একপর্যায়ে পথিক নামে এক যুবককেও মারধর করে পিংকি। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে সহরবানু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে খান্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছিল, মিছিল ও শোরগোলের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সবশেষ খবর পেয়ে পুলিশ ও শিক্ষা অফিসার এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গাড়িতে থাকা ডক্টর মোহাম্মদ রেজাউল করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গৌতম চন্দ্র রায় বলেন, পিংকি ম্যাডাম অটোরিকশায় খুব বাজে আচরণ করে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তিনি অটোতে থাকা এক যুবক ও সহরবানু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে থাপ্পড় মারেন। একজন শিক্ষক কিভাবে অন্য শিক্ষককে মারতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়।

অটোরিকশায় থাকা খান্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও পিংকির সহকর্মী স্বপ্না বেগম বলেন, হঠাৎ গাড়িতে থাকা পথিক নামের যুবককে তিনি থাপ্পড় মারেন এবং বাজে কথা বলতে থাকেন। পরে আঁখি ম্যাডাম শুধু বলেন পাগল নাকি! তখনই পিংকি তাকেও থাপ্পড় মারেন এবং হিজাব টেনে খুলে ফেলতে চেষ্টা করেন।

সহরবানু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারেছা আক্তার আঁখির সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই নিন্দনীয়। এই ঘটনা শুনার পরপরই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে খান্দার বিদ্যালয়ে আসে। আমি বাচ্চাদের শান্ত করে নিয়ে আসি। তবে এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।

খান্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা আক্তার বলেন, ঘটনার দিন হঠাৎ সহরবানু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি ঝটিকা মিছিল নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে দরজা, জানালায় ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। বিদ্যালয়ের ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়লে আমি বিদ্যালয় ভবনের কেসি (ছোট) গেইটে তালা লাগিয়ে দিই। আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার অপরাধ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে কিন্তু শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে যেভাবে বিদ্যালয়ে এসে বিচার চেয়েছে বিষয়টি যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়নি। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক জানিয়েছি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, শুনেছি সহরবানু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে খান্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা থাপ্পড় মারেন। ঘটনাটি শোনার পরপরই স্কুলে আসি। এই ঘটনায় সহরবানু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে; আমি বুঝিয়ে তাদের শান্ত করেছি এবং দুই পক্ষের কথা শুনেছি। অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষক পিংকির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন