
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এক কিশোর (১৫) ও কিশোরীর (১৫) মধ্যে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা দেখা করতে গেলে কিশোরীর স্বজনেরা তাদের জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে বাল্যবিবাহ দেন। তবে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করেছে। ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায়। ছেলেটি কুলাউড়া উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং মেয়েটি জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা ও অষ্টম শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করেননি।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর থেকে ছেলেটিকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তার স্বজনেরা। মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। রাতে ছেলের এক বন্ধু ফোন করে জানায়, সে জুড়ী উপজেলার একটি রেস্তোরাঁয় মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল এবং সেখান থেকে মেয়ের স্বজনেরা দুজনকে জোর করে নিয়ে যান। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে এক ইমামের মাধ্যমে তাদের বাল্যবিবাহ দেন।
ছেলের পরিবারের কাছে ঘটনার ভিডিও পাঠানো হলে তারা থানায় অভিযোগ করেন। এরপর শনিবার রাত ১১টার দিকে জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নে মেয়েটির এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কিশোর–কিশোরীকে উদ্ধার করে জুড়ী থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এ ঘটনায় ছেলের মা বাদী হয়ে মেয়ের বাবা, মা ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া জানান, ‘ছেলের বন্ধুর মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, কিশোরটিকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং পরে তাদের বাল্যবিবাহ দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। অন্যদিকে রবিবার কিশোর ও কিশোরীকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে, সেখানে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার