
জুড়ী সংবাদদাতা:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বটুলি সীমান্তে অবস্থিত বেইলি সেতু ধসে পড়েছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটা থেকে সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ সড়কসহ সেতুটি ধসে যায়। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বটুলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে সকল প্রকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং যাত্রী পারাপার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বটুলি শুল্ক স্টেশনের বিপরীতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পুরান রাঘনা বাজার শুল্ক স্টেশন অবস্থিত। ধসে যাওয়া সেতুটির পূর্ব অংশ ভারতে এবং পশ্চিম অংশ বাংলাদেশে অবস্থিত। সেতুটি কয়েক বছর আগে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করলেও, দীর্ঘদিন ধরে তা নড়বড়ে অবস্থায় ছিল।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, রাঘনাছড়ায় পানির স্তর কমে এসেছে। সেতু সংলগ্ন সংযোগ সড়কের কিছু অংশ এবং সেতুরও একই অংশ ধসে পড়েছে। দুই পাশে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করে সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, ভারতের পক্ষ থেকে পূর্ব প্রান্তে ধসে পড়া সেতুর কাছে একটি নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে দেখা গেছে, যেখানে কিছু স্থানে মাটি খোঁড়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার ভোর থেকেই শুল্ক স্টেশন এলাকায় কোনো কার্যক্রম ছিল না। উপস্থিত ছিলেন না সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারাও। বর্তমানে দুই দেশের পক্ষ থেকেই ব্রিজে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একটি নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ধসে পড়া সেতু মেরামতে বিলম্ব হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
বটুলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোস্তফা হোসেন জানান, ‘সকাল আট-নয়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সড়ক ও সেতু ধসে পড়েছে। বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে এই চেকপোস্ট দিয়ে শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকেরা বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করতে পারেন, বাংলাদেশি নাগরিকেরা ভিসা সুবিধার অভাবে এই চেকপোস্ট ব্যবহার করে ভারতে যেতে পারেন না।’
বটুলি শুল্ক স্টেশনের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নাজমুল আলম আহমদ জানান যে, ‘বেইলি সেতুটি বহুদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। মাসখানেক আগে সিলেটে অবস্থিত ভারতের সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার চন্দ্র শেখর বটুলি শুল্ক স্টেশন এলাকা পরিদর্শন করেন। সে সময় বিভিন্ন দাবির পাশাপাশি নড়বড়ে বেইলি সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছিল। এরই মধ্যে ভারত সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে আপাতত ধসে পড়া সংযোগ সড়ক ও সেতু দ্রুত মেরামতের জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান নাজমুল আলম। এখন দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া না হলে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।’
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার