Daily Jalalabadi

  সিলেট     মঙ্গলবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ৮ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বলসোনারোকে ক্ষমা নয়, ব্রাজিলে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

admin

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২:২৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২:২৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
বলসোনারোকে ক্ষমা নয়, ব্রাজিলে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক:
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকে সাধারণ ক্ষমা (অ্যামনেস্টি) না দেওয়ার দাবিতে সারা দেশে লাখো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যুত্থান চেষ্টার দায়ে আদালত কর্তৃক ২৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া এ ডানপন্থী নেতা আবারো আলোচনায় এসেছেন।

২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে পরাজিত হওয়ার পর অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার ষড়যন্ত্র করেন বলসোনারো। পরিকল্পনায় ছিল লুলা, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরালদো আলকমিন এবং সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে হত্যার ষড়যন্ত্র। এ কারণেই চলতি মাসের শুরুতে আদালত তাকে দীর্ঘ কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।

রোববার দেশের বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। রিও ডি জেনেইরোর বিখ্যাত কপাকাবানা সৈকতসহ সাও পাওলো, ব্রাসিলিয়া ও অন্যান্য শহরে জনসমুদ্র গড়ে ওঠে। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে মানুষ স্লোগান তোলে—‘সেম আনিস্তিয়া’ (কোনো ক্ষমা নয়)।

এই গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন দেশটির জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীরা। এর মধ্যে ছিলেন কিংবদন্তি কায়েতানো ভেলোসো, চিকো বুয়ারকে ও জিলবার্তো জিল, যারা একসময় ১৯৬৪-৮৫ সালের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। ভেলোসো বলেন, ‘ব্রাজিলের জনগণ লুলাকে নির্বাচিত করেছে। এ কারণেই দেশে গণতন্ত্র টিকে আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জনগণ হিসেবে, জাতি হিসেবে কোনোভাবেই সাধারণ ক্ষমা মেনে নেব না।’

বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদের নিম্নকক্ষে ডানপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে পাস হওয়া এক বিতর্কিত খসড়া আইনের বিরুদ্ধেও। সমালোচকদের ভাষায় ‘ডাকাত আইন’ নামে পরিচিত এই প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা বা গ্রেপ্তার করা আরও কঠিন হবে। সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বলসোনারোর দুটি বিশাল পুতুল প্রদর্শন করা হয়।

রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় হাজারো মানুষ সমবেত হন কংগ্রেস ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনের সামনে, যেখানে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারির অভ্যুত্থানচেষ্টায় বলসোনারোর সমর্থকরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছিল। বর্তমানে বলসোনারো সেখানেই গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন।

দেশের বাইরে বার্লিন, লিসবন ও লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে প্রবাসী ব্রাজিলিয়ানরা একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন। লন্ডনে সংসদের বাইরে প্রবাসীরা বলসোনারোর কারাদণ্ড কার্যকরের দাবি জানান।

বিক্ষোভে যোগ দেন দেশের অভিনয়শিল্পী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের তারকারাও। নেটফ্লিক্স সিরিজ নারকোস খ্যাত অভিনেতা ওয়াগনার মৌরা সালভাদরে এক সমাবেশে বলেন, ‘গণতন্ত্র দীর্ঘজীবী হোক, ব্রাজিল দীর্ঘজীবী হোক!’ তিনি বলসোনারোর দণ্ডাদেশকে দেশের গণতন্ত্রের জন্য ‘অসাধারণ মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেন। বেলো হরিজন্তেতে স্থানীয় গায়িকা ফারনান্দা তাকাই বলেন, ‘আমাদের অবস্থান নিতে হবে, দেখাতে হবে আমরা কতটা ক্ষুব্ধ। না হলে রাজনীতিবিদরা সবসময় জবাবদিহি এড়িয়ে যাবে।’

এদিকে আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা শিল্পী চিকো বুয়ারকে সাধারণ ক্ষমার সম্ভাবনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনের সময় নির্বাসিত হওয়া এ কিংবদন্তি গায়ক বলেন, ‘আমরা ১৯৭৯ সালের সাধারণ ক্ষমার পুনরাবৃত্তি চাই না, যেটার কারণে সামরিক শাসনের অপরাধীরা কোনো শাস্তি পায়নি। অপরাধ করেছে অভ্যুত্থানকারীরাই, আমরা গণতন্ত্রপন্থীরা তাদের কাছে কোনো ঋণী নই।’

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন

Follow for More!