Daily Jalalabadi

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ৯ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৪শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশে আওয়ামী সমর্থকদের কাণ্ড : এ কদর্য রাজনীতির অবসান ঘটুক

admin

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ০২:৪৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ০২:৪৫ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
বিদেশে আওয়ামী সমর্থকদের কাণ্ড : এ কদর্য রাজনীতির অবসান ঘটুক

উপ-সম্পাদকীয়:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়ে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গিয়ে সোমবার বিকালে বিমানবন্দরে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বিএনপি ও এনসিপির নেতারা। এ সময় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ঘিরে ইউনূসবিরোধী স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি গালাগালও করেন। ডিম নিক্ষেপ করা হয় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনের গায়ে। পরে এ ঘটনায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলের সামনে থেকে মিজানুর রহমান নামে যুবলীগের এক কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হেনস্তা ও ডিম নিক্ষেপের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠে সমালোচনার ঝড়। রাজধানীর শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। ঘটনার জন্য ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং রাজনৈতিক নেতাদের জন্য নিরাপত্তা সহায়তা অব্যাহত রাখার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করায় এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের।

নিউইয়র্কের এমন ঘটনা, বিশেষ করে এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপের বিষয়টি বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যে ক্ষুণ্ন করেছে, তা বলাই বাহুল্য। এ ঘটনা প্রমাণ করে, নিষিদ্ধ দলটির কর্মী-সমর্থকরা প্রতিপক্ষের প্রতি কতটা বিদ্বেষপূর্ণ ও অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, দলটির বিদেশে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের যে তাদের অন্যায়ের জন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই, তা আবারও প্রমাণ করল তারা। নিউইয়র্কে বিএনপি ও এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা, গালাগাল ও ডিম নিক্ষেপ-এ সবকিছুই ক্ষমতাচ্যুতদের নোংরা রাজনীতির উদাহরণ।

প্রধান উপদেষ্টার মতো একজন আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সফরসঙ্গীদের জন্য ন্যূনতম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে না পারাটা দেশের কূটনৈতিক সক্ষমতার দুর্বলতাকেও সামনে নিয়ে আসে। এ ধরনের ঘটনায় সরকারের দুঃখ প্রকাশ নয়, পুনরাবৃত্তি রোধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এদিকে, সফরে থাকা এনসিপির দুই শীর্ষনেতা এ হামলাকে রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর আক্রমণ হিসাবেই দেখছেন। তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি এ কারণে সঠিক যে, হামলাটি কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে নয়, বরং রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই করা হয়েছে। দুঃখজনক যে, বিদেশের মাটিতেও ফ্যাসিস্ট দলটি জুলুম-নির্যাতনের রাজনীতি পরিত্যাগ করতে পারেনি।

আমরা মনে করি, নিউইয়র্কের এ ঘটনা কেবল এনসিপি বা বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা নয়, বরং এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপরও আঘাত। যে দলগুলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তাদের ওপর বিদেশে এমন হামলা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকেও ক্ষুণ্ন করে। রাজনৈতিক নেতাদের মতপার্থক্য থাকতেই পারে; কিন্তু তা যেন সহিংসতায় রূপ না নেয়, এটি নিশ্চিত করা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। নিউইয়র্কের ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করা প্রয়োজন। সরকার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন

Follow for More!