
নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনাকে ‘ঝুঁকিতে ভরা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে, সেই লক্ষ্যই এবার এই রাজনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
শনিবার দুই হিজবুল্লাহ কমান্ডারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে কাসেম বলেন, ‘আসলে এই পরিকল্পনাটি বিপদে পূর্ণ। এটি ইসরায়েলের প্রকল্প, যা যুদ্ধ, আগ্রাসন, গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে যা তারা করতে পারেনি- তা তারা রাজনৈতিক উপায়ে অর্জনের চেষ্টা করছে।’
তবে তিনি বলেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে হামাসের ওপর নির্ভর করছে। তার ভাষায়, ‘আমরা এই পরিকল্পনার বিস্তারিত আলোচনায় হস্তক্ষেপ করব না। শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ, হামাস এবং সব সংগঠনই তাদের উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
এর আগের দিন শুক্রবার হামাস গাজায় জিম্মিদের মুক্তি ও প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ট্রাম্পের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেয়। সংগঠনটি পরিকল্পনার কিছু দিককে স্বাগত জানালেও কিছু বিষয়ে আপত্তির ইঙ্গিত দিয়ে বলেছে, শর্তগুলো চূড়ান্ত করতে আরও আলোচনা প্রয়োজন।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনায় হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে—যেসব বিষয় হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় সরাসরি উল্লেখ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনাকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতিমধ্যে সমর্থন জানিয়েছেন।
নাঈম কাসেম আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই “গ্রেটার ইসরায়েল প্রকল্প”-এর বিরোধিতা করতে হবে।’ এই ধারণাটি বাইবেলীয় বা ঐতিহাসিক মানচিত্র অনুযায়ী ইসরায়েলের সীমানা সম্প্রসারণের বিষয়টি বোঝায়, যার বিভিন্ন সংস্করণে বর্তমান জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, মিসর, ইরাক এবং সৌদি আরবের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর এই শব্দগুচ্ছ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, যখন ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই ও গোলান মালভূমি দখল করে।
গত আগস্টে নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এই ‘গ্রেটার ইসরায়েল’-এর ধারণার প্রতি সমর্থনসূচক মন্তব্য করায় আরব দেশগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
কাসেম বলেন, ‘এই প্রকল্পের মোকাবিলা করা প্রত্যেকের দায়িত্ব, কারণ ইসরায়েলের পরিকল্পনা অনুযায়ী এটি একসময় সবার কাছেই পৌঁছাবে—দেরিতে হোক বা আগে।’
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার