Daily Jalalabadi

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামীলীগের পূনর্বাসনের প্রক্রিয়া কি চুড়ান্ত?

admin

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | ১২:০৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | ১২:০৯ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
আওয়ামীলীগের পূনর্বাসনের প্রক্রিয়া কি চুড়ান্ত?

এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। ২০২৪ সাল। সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা ও তাঁহার কথিপয় দোষররা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। হয়ত শেখ পরিবারের অস্তিত্ব খোজে পাওয়া না ও থাকতে পারে। শেখ মুজিবুর রহমান বা তাঁহার কন্য আওয়ামীলীগকে তাঁহাদের পরিবারিক সম্পত্তিতে রপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন। যেমন শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামীলীগকে পরিবারিক সম্পত্তির প্রথম ধাপ বাকশাল গটন এর মধ্যমে সম্পদান করতে গিয়ে নিজেই স্বপরিবারে নিহত হয়েছিলেন। ১৫ই আগস্টের হত্যাকান্ড ঘটনোর ক্ষেত্র তৈরী করেন তিনি নিজে-ই, এমন সমালোচনা প্রায়ই শুনা যায়। আওয়ামীলীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী সহ দলের অগনিত প্রবীন নেতৃত্বকে অবমূল্যায়ন করেতে গিয়ে নিজেই রাজনীতি থেকে বিলীন হয়ে যান। তাহার-ই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ২৫ বছর পর জনগনের পায়ে হাতে ধরে ক্ষমতাসীন হয়ে পিতার পদাংক অনুসরন করতে থাকেন। যার শেষ পরিনতি ২০২৪ সালের সফল গণঅভ্যুত্থান। নিকটাত্মীয়দের সকলকে নিয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। নিরাপদে নিকটাত্মীয়দের নিয়ে দেশ ত্যাগ করে প্রাণে বেঁচে গেলেও দলের অগনিত নেতা কর্মীদের বিপদের মধ্যে ফেলে যান। যাহারা জীবন বাজি রেখে তাঁহার পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন, তাঁহারা আজ নিঃস্ব। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করিতেছেন অগনিত নেতা কর্মী। এটা কি রাজনীতি বলা যায়? ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করলেন শেখ হাসিনা ও তাঁহার পরিবার। আর নির্যাতন নিপিড়ন বা মামলা হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ আওয়ামীলীগ দলীয় সমর্থকরা। হয়ত শেখ হাসিনার সুবিধা ভোগী ১-২% নেতা কর্মী ছিলেন। শেখ হাসিনার পরামর্শে-ই আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল আদালত গঠিত হয়েছিল এবং কেঙ্গারুক বিচারকদের দ্বারা নিরপরাদ ব্যক্তিদের বিচারের নামে হত্যা করিতেন শেখ হাসিনা। দানবের ভূমিকা পালন করে নৃত্য করতেন। মৃত্যুর পূর্বে বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ জনাব সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক আদালত কোর্টটি যেন বহাল থাকে। কথা রেখেছেন শেখ হাসিনা। যেই আদালতে কথিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পাদন হয়েছিল, সেই কোর্টেই অচিরে-ই শেখ হাসিনা সহ তাঁহার সকল কুশিলবদের ফাঁসি কার্যকর হবে। হত্যার বদলা হত্যা যাহা ইসলাম ধর্ম সমর্থন করে। ইসলামী আইন প্রতিষ্টার কার্যকর পদক্ষেপ হবে এ বিচার ব্যবস্থা। কোন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে কি প্রান দিয়েছেন? না, একজন না। প্রান দিয়েছেন সাধারন ছাত্র জনতা। হালুয়া রুটির সুযোগ নিচ্চেন তাঁহাদের রক্তের বিনিময়ে মাননীয় আদালতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ এর ক্ষমতা বলে। অন্তবর্তী সরকারকে মাননীয় আদালত বৈধতা দিয়াছেন। অন্তবর্তী সরকারের উচিৎ ছিল নেপালের অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতাগ্রহনের দিনই নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করে রাজনীতিবিদদের নিকট ক্ষমতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে।নেপালের সরকার জাতির নিকট প্রশংসিত হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার হয়ত অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সময় নিতে চাচ্ছেন। অযথা কেন সময় নিচ্ছেন সাধারন জনগণ কিন্তু জানে না। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০লক্ষ (যদিও বিতর্কিত) শহীদের রক্তের বিনিয়মের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্টিত হয়। লাল সবুজের পতাকা বিশ্বের মানচিত্রে লিপিবদ্ধ হয়। ২০২৪ সালের ১৪০০ শহীদের বিনিময়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। বাংলাদেশের স্বাধীন এবং স্বৈরাচারী হাসিনার পালায়ন কি এক? না, একনয়। অন্তবর্তীকালীন সরকার ও তাঁহার দোষররা বা ২০২৪ সালকেই স্বাধীনতার চেয়ে গুরুত্ব বেশী দিতে চাচ্ছেন। সেটা কি এক করা সম্ভব হবে। কোথায় স্বাধীনতা আর কোথায় সরকার পরিবর্তন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করে অহেতুক সময় ক্ষেপন করতে লাগলেন। কমিশনের সকল কার্যক্রমই বাস্তবায়ন করবেন নির্বাচিত সরকার। যে দলই নির্বাচিত হউক না কেন, কমিশনের কোন রিপোর্ট কি জোর করে বাস্তবায়ন করা যাবে। কমিশন অহেতুক সময় ক্ষেপন করার জন্য প্রতিটি দলের ২/৪ জন নেতাকে আমন্ত্রন জানালেন। তাঁহাদের সিদ্ধান্ত কি ১৭/১৮ কোর্টি জনগনের সিদ্ধান্ত হয়ে গেল? প্রান দিল সাধারন জনগণ। আর সিদ্ধান্ত নিবেন ২/৪ জন। এ কমিশনের কোন সিদ্ধান্তই জনগণ মানতে বাধ্য নহে। শেষ পর্যন্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত যদি বুমেরাং হয়ে যায়, তখন সরকার কি করবে? যেসব রাজনৈতিক দল সমূহ সাধারণ জনগনের স্বতঃস্ফর্ত অভ্যুত্থানকে সমর্থন ও সহযোগীতা করেছিল, তাঁহাদের মধ্যে দিন দিন দূরত্ব তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র” এবং ইসরাইলের “মুসাদ”। রাজনৈতিক দল সমূহের অনৈক্যের কারনে গণঅভ্যুত্থানের আশা আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হতে চলেছে বলে আমার বিশ্বাস। তাঁহাদের উচিৎ ছিল, যত দ্রুত সম্ভব সরকারকে চাপ দিয়ে অবাদ ও সুষ্ট নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু তা নাকরে কাদা ছুড়া ছুড়িতে ব্যতি ব্যস্ত। যেহেতু “র” এবং “মুসাদ” আওয়ামীলীগকে পূনর্বাসন করতে মরিয়া, সেহেতু শেখ পরিবারকে আড়ালে রেখে তাঁহাদের বঞ্চিত ৩৬% ভোটারকে ভিন্ন নামে বা ভিন্ন ভাবে একত্রিত করে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দিবে-ই। লেখক, সভাপতি-সু-শাসনের জন্য নাগরিক সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট। মোবাইল নং ০১৮১৯১৭৬২১৭

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার

শেয়ার করুন

Follow for More!