Daily Jalalabadi

  সিলেট     বৃহস্পতিবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারকের বাসায় ঢুকে হত্যাকাণ্ড

admin

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বিচারকের বাসায় ঢুকে হত্যাকাণ্ড

সম্পাদকীয়:
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আবদুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে হত্যার যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তা কেবল একটি পরিবারকে নয়, বলতেই হবে, আমাদের সমগ্র সমাজব্যবস্থার নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ১৫ বছরের কিশোরকে নৃশংসভাবে হত্যা এবং তার মাকে গুরুতর আহত করার এ ঘটনা সমাজের অবক্ষয়ের এক প্রতিচ্ছবি। একজন বিচারকের পরিবার যদি তার নিজ বাসাতেও নিরাপদ না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিচারকের স্ত্রীর পূর্বপরিচিত এবং আর্থিকভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত। কিন্তু এই পরিচিতিই একসময় ব্ল্যাকমেইলিং ও প্রাণনাশের হুমকিতে রূপ নেয়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং পরে রাজশাহীতে সেই জিডির কপি জমা দেওয়ার পরও তাৎক্ষণিক কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি-যার চূড়ান্ত ফল হলো এই অকল্পনীয় ট্র্যাজেডি।

প্রশ্ন হচ্ছে, হত্যাকারীর বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল ও হয়রানির অভিযোগ থাকার পরও সে কীভাবে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েও পার পেয়ে যায়, এমনকি আটক হওয়ার পরও জামিনে বেরিয়ে এসে এমন নৃশংসতা ঘটানোর সুযোগ পায়? বলা বাহুল্য, সামাজিক অবক্ষয় রোধে অবিলম্বে কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য। প্রথমত, ব্ল্যাকমেইলিং ও হত্যার হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে জিডিকে হালকাভাবে নেওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রভাবশালী বা পরিচিত মহলে হয়রানির ক্ষেত্রে আইনি সুরক্ষা জোরদার করা প্রয়োজন, যাতে ভুক্তভোগী কোনো ধরনের সামাজিক বা পেশাগত চাপের কারণে অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা করতে দ্বিধাবোধ না করেন। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা বা আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক সদস্যদের অপরাধপ্রবণতা রুখতে তাদের ওপর নিয়মিত নজরদারি এবং প্রয়োজনে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত।

বিচারকের পরিবারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান এবং অপরাধীকে দ্রুততম সময়ে বিচারের মুখোমুখি করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের উচিত এই ঘটনার গভীরে যাওয়া। কেন মানুষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে নৃশংস অপরাধে প্রলুব্ধ হচ্ছে? সামাজিক মূল্যবোধের চর্চা এবং আইনের শাসনের সঠিক প্রয়োগ ছাড়া এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব নয়। এমন বীভৎস ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নিরাপদ সমাজ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন

Follow for More!