
স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিন হত্যা মামলার রায় আগামী ৭ জানুয়ারি ঘোষণা করা হবে। রবিবার (৩০ নভেম্বর) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এই তারিখ নির্ধারণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বদরুল ইসলাম।
রবিবার কারাবন্দি আসামি পুলিশের বহিষ্কৃত এএসআই আশেক এলাহির যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এর আগে ২৬ নভেম্বর পলাতক থাকা পাঁচ আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে কয়েকজন আগেই জামিন নিয়ে পলাতক হয়ে যান। প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াও জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তিনি আত্মসমর্পণ করেননি; এমনকি দেশ ছেড়েও পালিয়েছেন বলে নানা গুঞ্জন রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর গভীর রাতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হানকে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়। পরদিন গুরুতর অবস্থায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটি দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও বিক্ষোভের জন্ম দেয়। পরিবারের দাবি ছিল, রায়হানের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটি পুলিশের নির্মম নির্যাতনেই ঘটেছে। ঘটনার পর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে করা মামলার তদন্তে সত্যতা পায় নগর পুলিশের গঠিত অনুসন্ধান কমিটি। তদন্তে এসআই আকবরসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর পিবিআই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে আটক করে।
২০২১ সালের ৫ মে পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। সেখানে এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াকে মূল অভিযুক্ত করা হয়। সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, সাময়িক বরখাস্ত এসআই হাসান উদ্দিন এবং আকবরের আত্মীয় সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানসহ মোট ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ৬৯ সাক্ষীর মধ্যে ৬৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। দীর্ঘ চার বছরের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এখন রায়হান উদ্দিনের পরিবার ও সিলেটবাসী অপেক্ষা করছে মামলার চূড়ান্ত রায়ের।
আগামী ৭ জানুয়ারি আদালত এ বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার