Daily Jalalabadi

  সিলেট     রবিবার, ১৪ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ  | ২৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণের দিন আজ

admin

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণের দিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার:
আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের এক কালো অধ্যায়। একাত্তরে ৯ মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামের শেষ মুহূর্তে যখন স্বাধীনতার সূর্য উদয় হতে যাচ্ছে ঠিক তখনই বিশ্ব ইতিহাসের বর্বরোচিত সেই হত্যাকাণ্ড ঘটে। মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। মহান বিজয় দিবসের ঠিক দুই দিন আগে আজকের এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা এই সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হন।

বিজয়ের পরে রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বধ্যভূমিসহ ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাতবাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই রাতে ঢাকায় অন্তত ২০০ জনের মতো বুদ্ধিজীবীকে নিজ নিজ বাসা থেকে চোখে কাপড় বেঁধে ধরে নিয়ে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ অন্য আরও অনেক স্থানে অবস্থিত টর্চার সেলে বীভৎস নির্যাতন চালানো হয়। পরে রায়েরবাজারের ইটখোলা ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়। তথ্যমতে, একাত্তরের গোটা ডিসেম্বর মাস জুড়ে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল।

বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার এই দিনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশেষ বাণী দিয়েছেন। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনে জাতীয় পর্যায়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্র্রচার করবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি পালনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজন করেছে।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা হানাদার বাহিনী তাদের আত্মসমর্পণের অব্যবহিত পূর্বে জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর এ ক্ষত বাংলাদেশ আজও বহন করে চলেছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, আজ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও কলঙ্কময় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোতে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। শোকাবহ এ দিনে আমি শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের সব বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ছিল দেশকে মেধাশূন্য করার গভীর চক্রান্ত। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার ঘটনা আজও সারা জাতিকে বেদনাবিধুর করে। তবে তাদের রেখে যাওয়া আদর্শ অর্থাৎ জ্ঞানবিজ্ঞান, মুক্তচিন্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির চেতনা, উন্নত ও প্রগতিশীল দেশ গড়ার প্রত্যয় জাগিয়ে তোলে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির সব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। জীবন উৎসর্গকারী বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীনতা ও জ্ঞানচর্চার জন্য তাদের ত্যাগ কখনো জনমন থেকে মুছে যাবে না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির মেধাবী সন্তানদের হত্যা করা একটি সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র ছিল।

আজ সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সকাল থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন

Follow for More!