স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর সূত্রাপুরে আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলার আসামি রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ঝলককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে মুন্না জামিনে থাকায় তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ মঙ্গলবার (৪ জুন) এই রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জোষঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
মামলার নথিসূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ৪/১ ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে সন্ত্রাসীরা অ্যাডভোকেট রইস উদ্দিনের ছেলে নিহত অপুর ভাই আরিফুর রহমান খান সেতুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারতে মারতে স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের মাঠে নিয়ে যান। খবর পেয়ে সেতুর ভাই অপু ও আতিকুর রহমান খান বাপ্পী সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাতাড়িভাবে গুলি করেন। এরপর তাদের তিন ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে গুলি করতে করতে চলে যান তারা।
পরে স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় তিন ভাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক অপুকে মৃত ঘোষণা করেন এবং দুই ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান।
এ ঘটনায় নিহত অপুর বোন আতিয়া খান কেয়া বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাকসুদুর রহমান ২০০৮ সালের ৩১ আগস্ট ওই সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, আসামিরা ১২ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান।
২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার শেষে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসি ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ওই রায়ে আতিক আহমেদ শিপলু নামে একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
নিয়ম অনুসারে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। আর কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন।
২০১৮ সালের ৭ মে অপু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখেছিলেন হাইকোর্ট। তবে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে দুইজনকে খালাস দেন। বাকি দুইজন পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।
এ রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুইজন আপিল করেন। পাশাপাশি খালাস পাওয়া দুইজনের বিরুদ্ধেও আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সব আপিলের শুনানি ২১ মে মঙ্গলবার শেষ হয়।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার