স্টাফ রিপোর্টার:
গত ২৩ জুন হৃদযন্ত্রে ‘পেসমেকার’ বসানোর পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে ফখরুল বলেন, সকাল পর্যন্ত আমি যতটুকু জানি- গতকালকে (সোমবার) তাকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে… তা করার কথা না। তিনি সিসিইউতে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা অ্যাডজাস্ট করতে পারেন না, সে কারণে সিসিইউর ফ্যাসিলিটিজগুলো (সুবিধা) কেবিনে নিয়ে তাকে শিফট করা হয়েছে। সেখানে তিনি এখন পর্যন্ত স্টেবল আছেন।
৭৯ বছর বয়সি এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। গত ২১ জুন হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে গেলে রাত সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে রোববার তার হৃদযন্ত্রে ‘পেসমেকার’ বসানো হয়। এর আগে তার হার্টে তিনটি ব্লক থাকায় একটি রিং পরানো হয়েছিল।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া। পরে করোনার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন। দুই শর্তে তিনি মুক্তি পান। শর্ত হলো- তাকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর সেই মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।
এ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘এই সরকারের মূল লক্ষ্যটা হচ্ছে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। সে কারণেই তাকে একেবারে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে… তার এতে কোনো সম্পৃক্ততা নেই… তাকে সাজা দিয়ে এবং পরবর্তীকালে হাইকোর্টে আরও বেশি সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। আপনারা জানেন, দুই বছর একটা পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে ছিলেন। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বার বার চেষ্টা করার পরেও সেখানে ভালো চিকিৎসক পাঠানো হয়নি। বহু চেষ্টার পর যখন তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো, সেখানেও তিনি সুষ্ঠু চিকিৎসা পাননি।’
তিনি বলেন, ‘যখন তাকে বাসায় নিয়ে আসা হল, সেটাও আবার শর্ত সাপেক্ষে যে, তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে। তখনই তার ধরা পড়ল লিভার সিরোসিস। এটা ছোটখাটো রোগ নয়, সিরোসিস… ইটস আ মেজর ডিজিজ। তখন ডাক্তাররা আমাদেরকে বলেছিলেন যে, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট ছাড়া তার কোনো পথ নেই। এটা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। আপনারা জানেন, আমরা কম চেষ্টা করিনি। সরকারের এখানে কোনো কৃতিত্ব নাই। আমরা এখন পর্যন্ত যেটুকু করেছি সেটুকু তার পরিবার এবং দলের চেষ্টাতেই হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডাক্তারদের নিয়ে এসেছি। তারা যে প্রসিডিউর করেছেন, সেই প্রসিডিউরে তিনি এখন পর্যন্ত টিকে আছেন।’
তবে এটি কোনো সমাধান নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, একমাত্র সমাধান হচ্ছে তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা। তার যে অনেকগুলো অসুখ আছে, সেই অসুখের জন্য তাকে এমন চিকিৎসা সেন্টারে পাঠাতে হবে সেখানে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার