স্টাফ রিপোর্টার:
জাপানি মায়ের কাছে জাপানে থাকা শিশু জেসমিন মালিকা ও বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকা শিশু লাইলা লিনাকে কোন ব্যবস্থাপনায়, কোন দেশে বাবা-মা দেখার অধিকার পাবেন এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২২ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে নাকানো এরিকোর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট শিশির মনির। ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
আদালতে জাপানি মা নাকানো এরিকো উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১০ জুলাই বড় কন্যা সন্তান জেসমিন মালিকাকে জাপানে রেখে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো। বুধবার দুপুরে নাকানো এরিকো বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন।
বৃহস্পতিবার নাকোনো এরিকো বলেন, কোর্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশে এসেছি।
গত ৯ মে বড় কন্যা সন্তান জেসমিন মালিকাকে নিয়ে জাপানি মা নাকানো এরিকোর বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আদালত অবমাননা মামলার শুনানি ও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে উভয়পক্ষের আপিল শুনানির জন্য ১১ জুলাই দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
সেদিন আদালত বলেছিলেন, মামলার উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে আমরা ওই দিন জাপানি শিশুদের নিয়ে আপিল মামলা নিষ্পত্তি করবো।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে বড় কন্যা সন্তান জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে যাওয়ার ঘটনায় জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন ইমরান শরীফ। এছাড়া জাপানি ৩ শিশুকে বাবা-মায়ের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন উভয়পক্ষ।
বড় কন্যা সন্তান জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে যান জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো। গত ৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টায় এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যান। জাপানি শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ এমন অভিযোগ করেছেন।
ইমরান শরীফ বলেন, আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরও নাকানো এরিকো আদেশ অমান্য করে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। তবে ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন।
একইসঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু ৯ এপ্রিল বিকেলে নাকানো এরিকো বড় সন্তানকে নিয়ে জাপানে চলে যান।
এদিকে আদেশ অমান্য করার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ।
ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম সেদিন বলেছিলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তার পরও বড় সন্তানকে নিয়ে নাকানো এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে।
রায়ে বলা হয়, প্রথম ও তৃতীয় মেয়েকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে বা যেকোনো দেশে বসবাস করতে পারবেন। তবে বাবা সন্তানদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে দ্বিতীয় মেয়ে লাইলা লিনা বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবেন। জাপানি মা দ্বিতীয় মেয়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।
এ বিষয়ে আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সেদিন বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার