রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীতে ‘ঘুসের’ ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার সেই উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কর-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত জাহান নিসু স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৪ এপ্রিল নিজ কার্যালয় থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক গ্রেফতারের তারিখ থেকে মুহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল দুপুরে অভিযান চালিয়ে রাজশাহী কর অঞ্চলের সার্কেল-১৩ (বৈতনিক) এর উপ-কর কমিশনার মুহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, রাজশাহী মহানগরীর মাদারল্যান্ড ইনফার্টিলিটি সেন্টার ও হাসপাতালের মালিক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার পাঁচ বছরের ব্যাংকে লেনদেনের বিষয়ে কর কর্মকর্তা মুহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া আপত্তি তোলেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে গেলে তিনি ডা. ফাতেমার কাছে ৬০ লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন। পরে তা ৫০ লাখ টাকায় রফা হয়।
বিষয়টি জানিয়ে ফাতেমা সিদ্দিকা গত ২৯ মার্চ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগ নিয়ে দুদকের রাজশাহী জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ে যৌথভাবে কাজ করছিল। তারা উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার ওপর নজরদারি করছিলেন।
গত মঙ্গলবার ঘুসের প্রথম কিস্তির ১০ লাখ টাকা নিয়ে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা করভবনে গিয়ে উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার দপ্তরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। কর কর্মকর্তা টাকা নিয়ে তার ড্রয়ারে রেখেছিলেন। এ সময় দুদকের পক্ষ থেকে ওই কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ঘুসের ১০ লাখ টাকাসহ মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
তবে ঘটনার দিন গ্রেফতার করে নিয়ে যাবার সময় উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর মাদারল্যান্ড ইনফার্টিলিটি সেন্টার ও হাসপাতালের মালিক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার ব্যাংক বিবরণীতে ২৬ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে, যা তার কর নথিতে উল্লেখ করেননি। এ বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করছিলেন। ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা ঘটনা ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিতভাবে তার অফিস কক্ষে দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ঢুকে টেবিলের ওপরে টাকা রেখেছিলেন। ওই টাকা তিনি ছুঁয়েও দেখেননি।
দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া যে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার কাছে ঘুস চেয়েছিলেন, তার প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। গ্রেফতারের পর রাজশাহী মহানগর জজ আদালতে মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে। বুধবার সেই মামলার শুনানি শেষে বিচারক উপ-কর কমিশনারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার