স্টাফ রিপোর্টার:
জামাতার সঙ্গে নিজের স্ত্রীর বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন হন ৪৫ বছর বয়সী জুলফিকার আলী মামুন নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় আদালত জামাতা রাকিব হোসেন ও নিহতের স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে।
একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
ভুক্তভোগী জুলফিকার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় পান বিক্রেতা ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ৩৬ বছর বয়সী শাহিনুর ভিকটিম জুলফিকার আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী এবং ২৩ বছর বয়সী রাকিব হোসেন ভুক্তভোগীর মেয়ে জামাতা। ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর গভীর রাতে ওই দুই আসামি জুলফিকারকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
মামলার বিবরণী ও আদালত সূত্র জানা যায়, শাহিনুর পরপুরুষে আসক্ত থাকায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার মনোমালিন্য দেখা দেয়।তিনি শ্বশুরালয় থেকে বেরিয়ে এসে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মজুপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা রাকিবের সঙ্গে তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি পাকাপোক্ত করতে স্বামীর অমতে তাদের ১০ বছরের শিশু কন্যাকে প্রেমিক রাকিবের কাছে বিয়ে দেন শাহিনুর। জুলফিকার পেশাগত কাজে ঢাকায় থাকতেন। ঘটনার ২ থেকে ৩ দিন আগে জুলফিকার ভাড়া বাসায় এসে স্ত্রী শাহিনুর ও মেয়ে জামাতা রাকিবকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটিও হয়।
এ অবস্থায় জুলফিকারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহিনুর ও রাকিব। ঘটনার রাতে তারা দুজন মিলে জুলফিকারকে মারধর ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন।
২২ অক্টোবর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা। মামলায় পুত্রবধূ শাহিনুর ও রাকিব এবং সহযোগী হিসেবে শাহ আহাম্মদসহ দুই থেকে তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
হত্যা মামলাটি তদন্ত করেন সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বেলায়েত উল্যাহ। তিনি শাহিনুর ও রাকিবকে অভিযুক্ত করে ৩০ নভেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এছাড়া মামলার ৩ নম্বর আসামি শাহ আহাম্মদকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বুধবার রায় ঘোষণা করে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার