স্টাফ রিপোর্টার:
বিগত টানা তিনটি নির্বাচনের মতো আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন-সমঝোতার ভিত্তিতেই নির্বাচন করবে বর্তমান একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (জাপা)। আসন-সমঝোতা চূড়ান্ত করতে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন জাপার দুই নেতা। শেষ মুহূর্তের এই বৈঠকে দু’পক্ষ মোটামুটি আপসরফায় পৌঁছেছে। সমঝোতার ফল জানা যাবে আজ শনিবার।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাপা প্রথমে আওয়ামী লীগের কাছে ৬০ থেকে ৭০টি আসন দাবি করেছিল। পরে তা ৫০-এ নামে। কয়েক দফা বৈঠকের পর সেটি নামে ৩৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে। গতকাল বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাপার বর্তমান ১৮ জন এমপির আসনে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় তবে, জাপা সেটা মানছিল না। এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর সংখ্যা বেড়ে হয় ২৬টি।
তবে এতেও জোর আপত্তি জানায় জাপা। দলটি ৩৫-৪০টি আসনে ছাড় পাওয়ার দাবিতে অনড় থাকে। কোন আসনে কেন ছাড় চায়- সেই যুক্তি তুলে ধরেন জাপার দুই নেতা।
আওয়ামী লীগ নেতারা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার মতামত জানতে আজ শনিবার তার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সভাপতি নির্দেশনা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও জাপা নেতারা চূড়ান্ত বৈঠক করে আজ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জাপাকে ৩০টি আসন ছাড় দেওয়া হতে পারে। কেননা আগামীকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন হওয়ায় আজই বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে। যদিও বর্তমান সংসদে জাতীয় পার্টির ২৭ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন।
সূত্র আরও জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে ১২টি আসন ছাড় দেওয়ার হতে পারে জাতীয় পার্টিকে। এছাড়া ময়মনসিংহ ও বরিশালে ২টি করে আসন রয়েছে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৩টি করে আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৫ ও সাতক্ষীরায় ১টি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা চলছে। এর সঙ্গে জাপার চাওয়া অনুযায়ী যুক্ত হতে পারে আরও কয়েকটি আসন।
বর্তমান একাদশ সংসদে জাপার ২২ জন সংসদ সদস্যের এর মধ্যে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এবং তার ছেলে সাদ এরশাদ এবার নির্বাচন করছেন না। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন। এছাড়া ডা. রুস্তম আলী ফরাজী এবার দলের মনোনয়ন পাননি। এই চারজনকে বাদ দিলে জাপার বর্তমান এমপির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে।
নতুন করে ঢাকা-১৮ আসনে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদের এবং ঢাকা-১৭ আসনে সালমা ইসলামের জন্য ছাড় চেয়েছে জাপা। এছাড়াও মোস্তফা আল মাহমুদসহ দলটির কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপির আসনে জাপা এবার ছাড় দাবি করেছে।
সূত্রে জানা গেছে, জাপাকে যেসব আসনে ছাড় দেওয়া হবে- সেগুলোতে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী থাকবে না। জাপার প্রার্থীরা আগের মতো দলীয় ‘লাঙ্গল’ প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বহাল থাকবেন। সমঝোতা হওয়া আসনগুলোর বাইরে অন্য আসনগুলোতে নৌকার পাশাপাশি জাপার প্রার্থীরাও লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 994 বার