স্টাফ রিপোর্টার:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নানান দর কষাকষির পর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ২৩টি আসনে সমঝোতা হয়েছে। অপেক্ষায় আছে আরও ৯টি আসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। কোন কোন আসন ছাড় দেওয়া হবে, তা আজ গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক জানাবে আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমাঝোতা নিয়ে বৈঠকে বসে জাতীয় পার্টি। পঞ্চম দফার এ বৈঠকে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দল দুটির শীর্ষ নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক নেতা একটি জানান, ২৩টি আসনে সমাঝোতা হয়েছে। আরও ৯টি আসন নিয়ে দেন-দরবার করছে জাতীয় পার্টি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ৯টি আসনে নৌকা প্রত্যাহার না করে দলীয় প্রার্থীদের নিষ্ক্রিয় করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। যদিও এতে রাজি হননি জাপার শীর্ষ নেতারা।
গত রাতে সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের অফিসে বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর সময় আসন সংখ্যা দুয়েকটি বাড়তে বা কমতে পারে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তবে, সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। রবিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। সোমবার দেওয়া হবে প্রতীক। সে কারণে আজই হতে পারে ভাগাভাগির শেষ দিন।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, শুক্রবারের বৈঠকে চূড়ান্ত সমাঝোতা হয়নি। আজ শনিবার আবারও আমরা বসব। উভয়পক্ষের সম্মতিতে একটি ভালো সমাধানে আমি আশাবাদী।
সূত্র জানায়, বৈঠকে যাদের নাম ও আসন চূড়ান্ত করা হয়েছে তারা হলেন, রংপুর-৩ জিএম কাদের, গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারি, ময়মনসিংহ-৮ ফখরুল ইমাম, পটুয়াখালী-১ জাপার কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার নারায়ণগঞ্জ-৩ লিয়াকত হোসেন খোকা, ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন, কিশোরগঞ্জ-৩ মো. মুজিবুল হক চুন্নু, নারায়ণগঞ্জ-৫ এ কে এম সেলিম ওসমান, বগুড়া-২ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বরিশাল-৬ নাসরিন জাহান রত্না, সুনামগঞ্জ-৪ পীর ফজলুর রহমান, চট্টগ্রাম-৫ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বগুড়া-৩ মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার, ঢাকা-৬ কাজী ফিরোজ রশিদ, নীলফামারী-৪ আহসান আদেলুর রহমান, ঠাকুরগাঁও-৩ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, কুড়িগ্রাম-২ পনিরউদ্দিন আহমেদ, লালমনিরহাট-৩ আসনে জাহিদ হাসান, রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসিফ শাহরিয়ার, রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আনিসুল ইসলাম মন্ডল, কুড়িগ্রাম-১ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, দিনাজপুর-৪ আসনে মোনাজাত চৌধুরী, পিরোজপুর-৩ মাশরেকুল আলম রবি।
এছাড়া সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন, সাতক্ষীরা-১ আসনে সৈয়দ দিদার বখত, কুষ্টিয়া-১ আসনে শাহরিয়ার জামিল, খুলনায়-৬ আসনে শফিকুল ইসলাম মধু, হবিগঞ্জ- ১ মুনিম চৌধুরী বাবু, ময়মনসিংহ-৫ সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, জামালপুর-২ মোস্তফা আল মাহমুদ ও শেরপুর-১ মাহমুদুল হক মনির নাম। ফেনী-৩ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ অথবা ৩ আসনে অ্যাড রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার আসন।
শুক্রবার রাতে গুলশানে জাপার সঙ্গে বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক জানান, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে তাদের আরও বৈঠক হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার