
স্টাফ রিপোর্টার:
সকাল দশটা। হাতে প্ল্যাকার্ড আর পড়নে অ্যাপ্রন, দলে দলে বিভিন্ন নার্সিং শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। তাদের সঙ্গে এসে যোগ দেন বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শত থেকে হাজারো উপস্থিতি। যোহরের নামাজের পর রাজনৈতিক দল, ইসলামি সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বস্থরের মানুষও মিছিল সহকারে জড়ো হন।
ততক্ষনে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য। অনেকের চোখে অশ্রু। কারো কারো চোখে মুখে রাগ আর ক্ষোভ। সবার মুখে একটাই দাবি দ্রুত বন্ধ হোক ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বরোচিত ইসরায়েলি গণহত্যা। সোমবার এই চিত্রই ছিলো সিলেট মহানগরীর সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে।
বিক্ষোভে অংশগ্রহনকারীরা বলেন, এতো লাশ। লাশের স্তূপ দেখলে নিজেকে ঠিক রাখা যায় না। চোখে পানি চলে আসে। বুক তরতর করে কেঁপে ওঠে। মনে হয় আমিও গাজায় চলে যাই। আমার অসহায়, নিরীহ ও নিপীড়িত মুসলিম ভাই-বোনদের সঙ্গে শহীদ হয়ে যাই। মন কাঁদে কিন্তু আমরা নিরুপায়!
সোমবার সকাল ১১টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই মানববন্ধন করে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিক্ষোভে পাক ভিউ মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং শিক্ষার্থী ইব্রাহিম সিলেটভিউকে বলেন, মুসলিম প্রধান দেশের নেতা হিসেবে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ জানানো উচিত। ইসরায়েল একটি অভিশপ্ত দেশ, যারা নিরীহ মুসলিমদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে।
বাদ যোহর নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় বিলাশ বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামীয়া সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা। এছাড়াও ছাত্র-জনতা ও তৌহিদী জনতা, বিভিন্ন ইসলামিক দল, সামাজিক সংগঠন বিক্ষোভ করে। বিকেলে বিক্ষোভ করে সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামী।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল যে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালাচ্ছে, তা ইতিহাসের অন্যতম নিকৃষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং আরব লীগের নীরব ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাজনক। বিক্ষোভ মিছিল থেকে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
এদিকে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান দবি করে সিলেটে কেএফসি রেস্টুরেন্টের পর বাটার শোরুম ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনার পর রেস্টুরেন্ট ও বাটার শোরুম বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
বিকাল ৩টায় সিলেট মহানগরের মিরবক্সটুলা অবস্থিত কেএফসি রেস্টুরেন্ট ও ৪টার দিকে দরগাগেইট এলাকা পরে ৫টার দিকে জিন্দাবাজার এলাকায় অবস্থিত বাটার শোরুমে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের গণহত্যাকারী ইসরায়েলি কোন প্রতিষ্ঠানের ঠাঁই হবে না এ দেশে। এই কেএফসি রেস্টুরেন্টে ইসরায়েলি বিভিন্ন কোমল পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান বাটার শোরুমে থাকবে এটি মেনে নেওয়া যায় না। ফিলিস্তিনি ভাইদের রক্ষা করতে বাংলাদেশের কোটি কোটি জনতা প্রস্তুত রয়েছে। চলমান হামলা শুধু একটি অঞ্চলের নয়, সমগ্র মুসলিম বিশ্বের প্রতি আঘাত। এই অমানবিকতা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কোতোয়ালি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার