
স্টাফ রিপোর্টার:
এপ্রিল মাসে দেশের গণমাধ্যমে ৫৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৩ জন নিহত ও ১২০২ জন আহতের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই মাসে রেলপথে ৩৫টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত, ৫ জন আহতের তথ্যও গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
তথ্যমতে, নৌ পথে ৮টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত, ১ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬১০টি দুর্ঘটনায় ৬২৮ জন নিহত এবং ১২০৭ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ২১৫ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত, ২২৪ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭.৯১ শতাংশ, নিহতের ৩৯.২৭ শতাংশ ও আহতের ১৮.৬৪ শতাংশ।
এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৮ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৬ জন নিহত ও ৩৭৭ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ২৮ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৩৫ জন চালক, ১১২ জন পথচারী, ৭২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫ জন শিক্ষার্থী, ১৫ জন শিক্ষক, ১০০ জন নারী, ৭০ জন শিশু, ০২ জন সাংবাদিক, ০১ জন চিকিৎসক , ০১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ০২ জন প্রকৌশলী এবং ০৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- ০২ জন পুলিশ সদস্য, ০১ জন সেনাবাহিনী সদস্য, ০২ জন আনসার সদস্য, ০১ সাংবাদিক, ০১ জন চিকিৎসক , ০১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ০২ জন প্রকৌশলী, ১১৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১০৭ জন পথচারী, ৬৭ জন নারী, ৫৫ জন শিশু, ৪৫ জন শিক্ষার্থী, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৩ জন শিক্ষক ও ০৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৮৩৯টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ৩০.৩৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৭.৬৪ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩.৭১ শতাংশ বাস, ১৬.৬৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৭.৭৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৭.২৭ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৫৫ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫০.৯৭ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৩.৮০ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮.৫১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৫.৯৯ শতাংশ বিবিধ কারনে, চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৩৫ শতাংশ, এবং ০.৩৫ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩১.৭৪ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৯.১০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৩.৬৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪.০৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.০৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৩৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, এপ্রিল মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা অবাধ চলাচল, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো, জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুঘটনায় পতিত হয়েছে, মহাসড়কের নির্মান ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার