
স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
সিলেটের এমসি (মুরারি চাঁদ) কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি মামলায় একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে মামলার বাদী ও ঘটনার শিকার তরুণী সাক্ষ্য দিতে আদালতে যাননি।
আজ মঙ্গলবার মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। এর আগে মামলাটি সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ছিল। দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হৃদয় পারভেজ নামের এক ব্যক্তি সাক্ষ্য দেন। তিনি এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ২০৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে তিনি পড়াশোনা শেষ করে ছাত্রাবাস ছেড়েছেন। আদালতে তাঁর সাক্ষ্য দেওয়ার সময় আট আসামি উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার আদালতে তিনজনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালতে মামলার বাদী ও ঘটনার শিকার তরুণী উপস্থিত হননি। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ১৯ মে নির্ধারণ করেছেন।
মামলার দুই সাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে রাষ্ট্রপক্ষ এবং সিলেটের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সিলেটের শাহপরান থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, মামলার বাদীর বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায়। গতকাল সোমবার তিনি সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বাদীর বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে তাঁকে পাননি। পরে তাঁর শ্বশুরবাড়ির ঠিকানায় গিয়ে বাদী এবং ঘটনার শিকার তরুণীকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বলে আসা হয়েছে। এরপরও তাঁরা আদালতে উপস্থিত হননি। অন্যদিকে আরেক সাক্ষীকে সুনামগঞ্জ থেকে আনা হয়েছে। তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিচারক এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। বিষয়গুলো অবহিত করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে ওসি জানিয়েছেন।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ও র্যাব। পরবর্তী সময়ে আদালতে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গ্রেপ্তারের পর আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ও মাহফুজুর। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে। তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের টিলাগড়কেন্দ্রিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার