অনলাইন ডেস্ক:
গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। প্রস্তাবের পক্ষে ১৩ ভোট পড়ে, এর কোনো বিপক্ষ ছিল না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া ভোটদান থেকে বিরত ছিল। ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে গাজায় আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম ধ্বংসাত্মক অভিযান এবং অবরুদ্ধ উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি সঙ্কটজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার পর কয়েক মাস ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটানোর আন্তর্জাতিক আহ্বানের মধ্যে এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হলো।
গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার ৯০ শতাংশেরও বেশিই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েলি অবরোধ ও বোমাবর্ষণের পরিস্থিতিকে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ‘পৃথিবীতে নরক’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
প্রস্তাবের মূল খসড়ায় ‘জরুরি ও টেকসইভাবে শত্রুতা বন্ধের’ আহ্বান জানানো হয় এবং গাজায় ত্রাণ সরবরাহের ওপর জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো হয়। গৃহীত প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কম অস্পষ্ট ভাষা বেছে নেওয়া হয়েছে এবং সমস্ত সহায়তার ওপর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড ভোটের পর বলেন, এটা কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা সেখানে পৌঁছেছি।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, যতদিন পর্যন্ত ‘শত্রুতা’ অব্যাহত থাকবে, ততদিন গাজা উপত্যকার মানবিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না।
ভোটের পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, আসল সমস্যা হচ্ছে- ইসরাইল যেভাবে এই হামলা চালাচ্ছে, তা গাজার অভ্যন্তরে মানবিক সহায়তা বিতরণে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। গাজায় একটি কার্যকর সহায়তা অভিযানের জন্য নিরাপত্তা, সুরক্ষায় কাজ করতে পারে এমন কর্মী, লজিস্টিক সক্ষমতা এবং বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ পুনরায় শুরু করা প্রয়োজন।
এদিকে, নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির আগে রাশিয়া যুদ্ধবিরতির ভাষাকে শক্তিশালী করার জন্য একটি সংশোধনী প্রস্তাব করেছিল। রাশিয়া অভিযোগ করে, খসড়া প্রস্তাবটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা ‘নিউটার’ (প্রভাবিত অর্থে) করা হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া ভোটের আগে নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, এই চুক্তিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে কাউন্সিল মূলত গাজা উপত্যকা আরও পরিষ্কার করার জন্য ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীকে চলাচলের ম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেবে।
অপরদিকে, গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘দ্বৈত অবস্থানের’ অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, ইসরায়েলকে অস্ত্র ও কূটনৈতিক সহায়তা দেওয়ার সময় ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। কিন্তু গাজায় একই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র তার ভিন্ন আচরণের জন্য অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার