স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটে ৩ ছাত্রকে ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মহানগরের শাহজালাল উপশহরে ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে- ওই তিন ছাত্রকে মারধর করে জোরপূর্বক ছিনতাইকারী সাজিয়ে স্বীকারোক্তি নিয়ে মুঠোফোনে ভিডিও রেকর্ড করেছে মারধরকারীরা। উপশহরের মূল সড়ক থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
নির্যাতনের শিকার জিম্মি হওয়া তিন ছাত্র হচ্ছে- সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার হিফজুর রহমান হুজাইফা এবং মৌলভীবাজারের মুমিন আহমদ ও আতিকুল ইসলাম।
তবে এ বিষয়ে এখনো সংশ্লিষ্ট থানায় কেউ অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি। একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে ‘আপস-মীমাংসা’র জন্য আজ শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর উপশহরে বৈঠক হবে।
নির্যাতনের শিকার একজন ছাত্রের অভিভাবক জানান- হুজাইফা, মুমিন ও আতিকুল গত এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশে শাহজালাল উপশহরের মেইনরোডস্থ প্যারিক্স কোচিং সেন্টারে আইইএলটিএস করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোচিং শেষ করে ৭টার দিকে তিনজনই উপশহর মেইনরোড দিয়ে হাঁটছিলেন। এসময় হঠাৎ মাংকি ক্যাপ কয়েকজন যুবক এসে তাদেরকে জোরপূর্বক দুটি মোটরসাইকেলে তুলে চোখ বেঁধে উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের মাঠে নিয়ে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট শুরু করে। মারধরের একপর্যায়ে ওই তিন ছাত্রকে বেঁধে ছিনতাইকারী সাজিয়ে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে দুর্বৃত্তরা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন থেকে তাদের পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে ।
একপর্যায়ে হুজাইফার পরিবার তার বিকাশ নাম্বারে ১০ হাজার টাকা পাঠান। দুর্বৃত্তরা হুজাইফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের বিকাশ একাউন্ট থেকে ০১৭৯-১৩৬৭৩২৯ নাম্বারে টাকা ট্রান্সফার করে নিয়ে যায়।
এছাড়া মুমিন ও আতিকুলের মোবাইল ফোনের বিকাশ থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করে দ্রুত মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিলো নাম্বারবিহীন।
তবে এ বিষয়ে এখনো থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়নি। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকালে বলেন- ঘটনা জানার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে- যারা এই তিন ছাত্রকে জিম্মি বা মারধর করে মুক্তিপণ আদায় করেছে তারা এক শিক্ষার্থীর পূর্ব পরিচিত এবং একটি প্রভাবশালী গ্রুপের কর্মী। তিনজনের মাঝে এক ছাত্রের সঙ্গে তাদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। মারধর ও টাকা আদায়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার তাদের পক্ষ থেকে ‘আপস-মীমাংসা’র চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যার পর শাহজালাল উপশহরের একটি বাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার