স্টাফ রিপোর্টার:
শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে দুই সপ্তাহ ধরে পাথর আমদানি বন্ধ # আজকালের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সবধরণের পণ্য আমদানি।
বর্ধিত আমদানি শুল্ক নিয়ে মুখোমুখি সিলেটের ব্যবসায়ী ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। দাবি আদায় না হওয়ায় আজকালের মধ্যে সিলেটের সকল স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে সবধরণের পণ্য আমদানি বন্ধের হুমকি দিয়েছেন তারা। পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সরকারও কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন খনি থেকে উত্তোলিত পাথর ও চুনাপাথর সিলেটের বিভিন্ন স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে খনিগুলো হওয়ায় পরিবহন খরচ কম পড়ে। তাই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের স্থলবন্দর দিয়ে আসা পাথর চুনপাথারের চেয়ে কম দামে সিলেট দিয়ে আমদানি করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। ফলে দেশের অন্যান্য শুল্ক স্টেশনের চেয়ে কম শুল্ক (ইম্পোর্ট অ্যাসেসমেন্ট রেট) দিতেন সিলেটের আমদানিকারকরা। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত বছরের আগস্টের দিকে সারাদেশের মতো সিলেটেও একই হারে শুল্ক নির্ধারণ করে। অ্যাসেসমেন্ট রেট সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার মৌখিক নির্দেশ দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতেই বেঁকে বসেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে তারা কিছুদিন পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রাখেন। পরে সমঝোতার ভিত্তিতে শুল্ক ১১.৭৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়।
চার মাসের ব্যবধানে গত ৪ জানুয়ারি সিলেট অঞ্চলের স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা বোল্ডার পাথর, ভাঙ্গা পাথর ও চুনাপাথরের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করতে সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারকে নির্দেশ দেয় এনবিআর। এর প্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি থেকে বর্ধিত শুল্কারোপ শুরু হয়। এনবিআরের নির্দেশে আরও ২ ডলার করে বাড়তি শুল্কারোপ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চার মাসের ব্যবধানে ফের শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা সিলেটের ২টি স্থলবন্দর ও ৫টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে সবধরণের পাথর আমদানি বন্ধ করে দেন। এরপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে ব্যবসায়ীরা কয়েক দফা বৈঠক করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় পাথর আমদানিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
সিলেট বিভাগীয় স্থলবন্দর ও শুল্কস্টেশনের ব্যবসা পরিচালনা সংক্রান্ত কমিটির আহবায়ক এমদাদ হোসেন জানান, চার মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো শুল্ক বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সারাদেশের সাথে সিলেটে স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানির তুলনা করলে চলবে না। কারণ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাথর ও চুনাপাথর খনিগুলো সিলেটের অনতিদূরে। তাই পরিবহন খরচ কম হওয়ায় আমদানিও হয় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে কম মূল্যে। তাই স্বভাবতই অ্যাসেসমেন্ট রেট কম হবে। কিন্তু এনবিআর সেটা বুঝতে না পেরে সারাদেশে এক রেট করতে চাচ্ছে। বাড়তি শুল্ক দিয়ে আমদানি করলে সিলেটের আমদানিকারকরা ক্ষতির সম্মুখিন হবেন, তাই তারা আমদানি বন্ধ রেখেছেন। বিষয়টি দেশের ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন এফবিসিসিআইকেও অবগত করা হয়েছে। সমস্যার সমাধান না হলে ১-২ দিনের মধ্যে সিলেটের সবকটি স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে সবধরণের পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার