নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় যুবলীগ নেতাসহ তিনজনকে আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার হুমকির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম ও উপপরিদর্শক (এসআই) সাধন বসাককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে দুই আসামি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক মো. আসসামস জগলুল হোসেন জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে ওই মামলায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুলবুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী আনিসুর রহমান আলমগীর বলেন, ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর আমাকেসহ উপজলা যুবলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম স্বপন ও বাবুলকে সোনারগাঁ থানা পুলিশের তৎকালীন ওসি মোর্শেদ আলম ও এসআই সাধন বসাক বাসা থেকে তুলে নিয়ে থানায় রেখে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করি। মামলার পর আসামিরা সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আমাকে হত্যা ও গুম করার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আদালত গত মাসের ৯ ফেব্রুয়ারি ওসি মোর্শেদ আলম ও এসআই সাধন বসাকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন। আমি এই মামলায় ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করি।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী আনিসুর রহমান আলমগীর। এই মামলায় আদালত বাদীর অভিযোগের তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারিক কার্যক্রমের জন্য ওসি মোর্শেদ আলম ও এসআই সাধন বসাকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। আজকে আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। এই আদেশে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমি মনে করি আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে মামলার বাদী ন্যায়বিচার পাবেন।
আদলতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, ২০২০ সালে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে। প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। ওই মামলায় আসামিরা উচ্চ আতালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছিলেন। আজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 998 বার