আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ১ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া এক বিবৃতিতে গাজাকে সহায়তার ঘোষণা দেন।
এদিকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইল ও কলম্বিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ দেখা দিয়েছে। চলছে অভিযোগ, পালটা অভিযোগ। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন। তিনি তাকে বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব ইসরাইল-ফিলিস্তিন পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আশা করে টোকিও।
গত ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলে নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্যও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করা হয়। এদিকে ইসরাইল-হামাস সংঘাতে ইরান কিংবা হিজবুল্লাহর মতো শক্তিগুলো জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ইসরাইলি জলসীমার কাছে ২ হাজার সৈন্য মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির দুই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ২ হাজার মেরিন ও নাবিক নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রের র্যাপিড রেসপন্স ফোর্সকে ইসরাইলের জলসীমার কাছে পাঠানো হচ্ছে। ইসরাইলকে পাহারা দিতে এর আগে পাঠানো একাধিক রণতরি ও যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে যোগ দেবে সংঘাত মোকাবিলায় দক্ষ এই বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ইরান ও তাদের সমর্থিত লেবানিজ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রতি কড়া সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
‘আসন্ন কয়েক ঘণ্টার মধ্যে’ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদুল্লাহিয়ান। সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাত্কারে এসব কথা বলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, (ইসরাইলের বিরুদ্ধে) আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিরোধ শক্তিগুলোর অগ্রিম পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে ইরান অংশ নেবে কি না, জানতে চাইলে আমির-আবদুল্লাহিয়ান বলেন, সব সম্ভাবনাই অনুমেয়। গাজায় সংঘটিত অপরাধের ব্যাপারে কোনো পক্ষেরই উদাসীন হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন ইরানের ঐ শীর্ষ কূটনীতিক।
এদিকে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে কলম্বিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে বড় ধরনের কূটনৈতিক বিরোধ দেখা দিয়েছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরাইলের পদক্ষেপকে অ্যাডলফ হিটলারের নািসদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ইসরাইল পালটা অভিযোগ করে বলেছে, ইহুদিদের জীবন হুমকিতে ফেলছেন পেত্রো এবং শত্রুতাপূর্ণ ও ইহুদিবিদ্বেষমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি হামাসের নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উত্সাহিত করছেন।
৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার পর টুইটারে পেত্রোর পোস্ট ঘিরে এই বিরোধের সূত্রপাত। তিনি নিজের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে ইসরাইলি পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি জনগণ, তাদের স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি ধ্বংসে নব্য নািস উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন। ইহুদিদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা কলম্বিয়ার বামপন্থি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে হামাসের হামলায় কয়েক শ ইসরাইলি বেসামরিক নিহতের কথা পুরোপুরি উপেক্ষা করার অভিযোগ এনেছে। তারা পেত্রোর বক্তব্যকে হলোকাস্টের শিকার ৬০ লাখ মানুষ ও ইহুদিদের জন্য অপমান হিসেবে উল্লেখ করেছে। পরের দিন আবারও টুইটারে পোস্ট দেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট। এবার তিনি আক্রমণ করেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তকে।
ইসরায়েলি মন্ত্রী বলেছিলেন, গাজায় তার সেনারা মানবপশুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই মন্তব্যের সমালোচনা করে টুইটে পেত্রো লেখেন, ইহুদিদের নিয়ে এমনটিই বলত নািসরা। এসব বিদ্বেষমূলক কথা অব্যাহত থাকলে তা হলোকাস্টের দিকে নিয়ে যাবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার