বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা:
সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজারের মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আসতে শুরু করেছে নতুন বই। নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে এসেছে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির বই। যদিও পাঠ্য বইয়ের সবগুলো বিষয় এখনো পুরোপুরি বিয়ানীবাজারে এসে পৌছেনি। জাতীয় নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে বাকী বই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্টানে পৌছে দেয়া হবে হবে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা যায়, প্রাইমারি, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্টেন, মাদ্রাসাগুলোতে পাঠ্য বই পৌছাঁনোর কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় বই প্রেরণে ব্যস্থ সময় কাটাচ্ছেন কর্মচারীরা। বছরের প্রথম দিনেই যেন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব হয় সেজন্য এই কর্মব্যস্ততা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পহেলা জানুয়ারি থেকে বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা পাবে নতুন বই। তাই বিতরণের জন্য স্কুলে স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছে নতুন এসব বই। তবে বই বিতরণ অনুষ্টানে কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশণা দেয়া হয়েছে।
বিয়ানীবাজার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান বলেন, এক মাস আগেই এখানকার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই পৌঁছানো শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের একাধিক গো-ডাউন রয়েছে। সেখানে থেকে বই গ্রহণ করছেন শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রধানরা। সরকারি-বেসরকারি, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিন বই পাবে। বিয়ানীবাজারে সবমিলিয়ে মোট ৪৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
বিয়ানীবাজার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: রোমান মিয়া বলেন, তৃতীয় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে নতুন বই দেওয়া হবে। সে লক্ষে সকল ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে বর্তমান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সারাদেশে একযোগে বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারির উপস্থিতিতে বই বিতরণ উদযাপিত হয়ে আসছে।
মুদ্রণ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও হরতাল-অবরোধের কারণে বই ছাপায় বিঘ্ন ঘটছে। এর মধ্যে নতুন সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে সময়মতো পাণ্ডুলিপি না পাওয়া। এ ছাড়া গত বছরের মতো এবারও কয়েকটি প্রেসে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানোর অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠদান শুরু হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বছর থেকে শুরু হবে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। ফলে পাল্টে যাবে পুরোনো বই। গত বছর শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে দিতে মার্চ মাস পেরিয়ে গিয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছে চলতি শিক্ষার্থীদের সিলেবাস সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে।
এনসিটিবি উৎপাদন শাখা জানায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপার কাজ করছে এনসিটিবি। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের মোট বই ১৮ কোটি ৬১ লাখ ১ হাজার ২০৬। আর প্রাথমিক স্তরের বই প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ। এ ছাড়া ইবতেদায়ি ও মাদ্রাসার জন্য ২ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ১৩৫টি বই ছাপা হবে। এবার অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠ্যবই ও টিচিং গাইড (টিজি) দেওয়া হচ্ছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার