স্টাফ রিপোর্টার:
আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নির্বাচনের দায়িত্বশীলরা নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রে প্রেরণ করেছেন। এ নির্বাচনকে ঘিরে সিলেট-০৬ আসন বিয়ানীবাজার-গোলপগঞ্জ উপজেলায় বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও সমর্থকদের কথার লড়াইয়ের সাথে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কাদা ছোড়াছুড়ি বেশ ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন সমাজকে। এরই সাথে কোটি টাকার প্রশ্ন- ভোটাররা এ আসনে পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন কোন দিকে জনরায় দিচ্ছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ছাড়া অপর ৫ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের সবাই নতুন। স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন, তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন সমসের মবিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আতাউর রহমান আতা ও ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি সাদিকুর রহমান। শুধুমাত্র সাবেক সাংসদ সেলিম উদ্দিনের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলেও ২০১৪ সালে তিনি সিলেট-০৫ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
চারবারের এমপি দুইবারের মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবার সপ্তমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনি জনরায় পেলে এ আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত হবেন। শুরুতে নৌকার অবস্থান কিছুটা নড়বড়ে থাকলেও ১ জানুয়ারি থেকে অবস্থান শক্ত হয়েছে। বলা যায় শেষ চার থেকে পাঁচ দিনে নৌকা অনেকটা লাফিয়ে এগিয়েছে। নৌকার পালে উত্তরের হাওয়া থাকলেও অপেক্ষা করতে হবে গোলাপগঞ্জ উপজেলাবাসীর রায় কোন দিকে যাচ্ছে তার উপর।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন গত কয়েক বছর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করার সুবাধে তাঁর পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা ছিল। এর ফলে নির্বাচনে শুরু থেকে তাঁর প্রতীক ঈগলের উড়ন্ত সূচনা দেখা যায়। যদিও দুরন্ত ছোটা ঈগলের গতিরোধ হয়েছে গত ২ জানুয়ারি থেকে। প্রচারণাকালীন সময়ে বিভিন্ন বিষয় ও ইস্যুর প্রভাব পড়েছে ঈগলের ভোটের মাঠে। তারপরও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভালভাবে টিকে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন। গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে তাঁর নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক রয়েছে। এখন অপেক্ষা দুই উপজেলার জনরায়; তারপর উপর নির্ভর করছে সরওয়ার হোসেনের জয় পরাজয়।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক সাংসদ সেলিম উদ্দিন নিজের জনপ্রিয়তা শেষ সময়ে পর্যন্ত ধরে গেছেন। তাঁর লাঙ্গল প্রতীকের জনপ্রিয়তা দুই উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে। নেতাকর্মীদের উজ্জীবীত করার মাধ্যমে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে লাঙ্গনের সাথে নিজের ব্যক্তি ইজেমকে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙ্গলের আলাদা জনপ্রিয়তাও রয়েছে। জিততে হলে তাকে বিয়ানীবাজার উপজেলার পাশপাশি গোলাপগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখ্যযোগ্য ভোট পেতে হবে।
তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বীর মুক্তিযোদ্ধা সমসের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম নিজ উপজেলা গোলাপগঞ্জে যতটা শক্ত অবস্থানে রয়েছেন তার বিপরীত চিত্র বিয়ানীবাজারে। তাঁকে জিততে হলে বিয়ানীবাজারেও উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক ভোটারের রায় পেতে হবে। গত ১৮দিনের প্রচারণায় বিয়ানীবাজারে তার পক্ষে তেমন একটা দেখা যায়নি। তারপরও তিনি নির্বাচনী রেসে টিকে আছেন ব্যক্তি ইমেজের কারণে। একই সাথে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ তাঁর সাথে প্রচারণা যোগ দেয়ায় তিনি জয়ের প্রত্যাশা করছেন।
ছয়প্রার্থীর মধ্যে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের আতাউর রহমান আতা এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি সাদিকুর রহমানের অবস্থান শুরু থেকে নড়বড়ে থাকায় প্রচারণাও পিছিয়ে রয়েছেন।
এদিকে হেভিয়েট চারপ্রার্থী শেষ সময় পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে নিজেদের অবস্থান পুক্ত করতে কাজ করেছেন। এ আসন থেকে যে প্রার্থী বিজয়ী হবে তাকে দুই উপজেলা থেকে উল্লেখ্যযোগ্য জনরায় পেতে হবে। ভোটের আধিপত্যে সেখানে নৌকা ও ঈগলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে গত এক সপ্তাহ থেকে। যার রেশ থাকবে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার