বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা:
বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানায় সিলেট জেলা বিএনপি। এরপর থেকে বহিষ্কারের পক্ষে-বিপক্ষে সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সরব আলোচনা। দলের এই দু:সময়ে উপজেলা বিএনপির ত্যাগী এই নেতাকে বহিষ্কার করায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা স্তম্ভিত। স্থানীয় যুবদল, ছাত্রদলেও এর প্রভাব পড়েছে।
জেলা বিএনপি প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক বিশৃংখলা, দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটুক্তি ও সমালোচনাসহ সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় ছরওয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ কমিটিতে ছরওয়ার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। তিনি মূলত: ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী ফয়সল আহমদ চৌধুরীর অনুসারী। এই আসনে বিএনপি তিন ধারায় বিভক্ত। এক ধারায় ফয়সল আহমদ চৌধুরী, অপর দু’টি ধারায় আবুল কাহের চৌধুরী শামীম এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের তিনজনই বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে চান। সূত্র আরো জানায়, ছরওয়ারের কারণে এখানে এমরান চৌধুরী প্রভাব বিস্তার করতে পারছেননা। দীর্ঘদিন থেকে তিনি একটি স্বতন্ত্র শক্তিশালী বলয় তৈরীর চেষ্টা করলেও সুবিধা করতে পারেননি। এ নিয়ে ভিতরে-ভিতরে মনোক্ষুন্ন ছিলেন এমরান। সর্বশেষ ফেসবুকে দলীয় এক কর্মীর পোষ্টে মন্তব্য করায় আরো ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন তিনি। এর জের ধরে তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে মনে করছেন ছরওয়ার হোসেন।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কারের খবরটি ভালোভাবে নিতে পারছেননা দলীয় নেতাকর্মীরা। ছরওয়ার হোসেন বিগত দিনে ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান সরকারের সময়ে একাধিকবার কারবরণ করেছেন তিনি।
ফেসবুকে জেলার সিদ্ধান্তের প্রতি নাখোশ ইঙ্গিত করে অনেকেই মন্তব্য করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, বহিষ্কারের এমন খেলায় দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমপি হতে আগ্রহীদের কোন্দলে দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলা হচ্ছে। সহ-সভাপতি মর্যাদার অপর আরেক নেতা বলেন, রাজনীতিকে কুক্ষিগত করার লক্ষে সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিএনপি বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ না করলে আমরা গণপদত্যাগ করবো। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, দলের এই দু:সময়ে তুচ্ছ কারণে যারা বহিষ্কার তত্ব আবিষ্কার করছে, তারা প্রকৃতপক্ষে আওয়ামীলীগের দালাল। তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া না হলে বিয়ানীবাজারে বিএনপির অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন বলেন, বহিষ্কারের পাশাপাশি আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে যাবো। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তারা রিসিভ করেননি।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার