ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের মানিককোনা এলাকায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ভিকটিম (২৩) বাদি হয়ে নুরুল ইসলাম গংদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং – ২৬৮ তারিখ ১২-০৫-২০৩৪।
মামলা থেকে জানা যায়, ভিকটিম শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত। তার জন্মের পরে মা মারা যান ও সাত বছর আগে রোগাক্রান্ত হয়ে বাবাও মারা যান। পরবর্তীতে তিনি নিজ ভিটায় ফুফুর কাছে থাকেন। তার একটি হাত ও একটি পা অকেজো হবার সুযোগে তার বাবার আপন চাচাতো ভাই উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম দ্বারা ধর্ষিত হোন। ভিকটিম এই ঘটনা তার ফুফুকে জানালেও ভয়ে মুখ খোলেন নি। পরবর্তী বিভিন্ন সময় তার ফুফা মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানার মধ্য খলাখাও গ্রামের নুর মোহাম্মদ ও কুলাউড়া থানার লালপুর গ্রামের ফুফাতো ভাই রিপন মিয়ার দ্বারাও ধর্ষিত হোন।
ভিকটিম ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আপনজন দ্বারা এমন নির্যাতনে শিকার হয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান অসহায় ভিকটিম। অভিযুক্ত প্রভাবশালী চাচার চাপের মূখে অনেকটাই নজরবন্ধী হয়ে পড়েন তিনি। নিরুপায় হয়ে গত ১লা মে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার কল দিয়ে তাকে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করলে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবজাল হোসাইন ভিকটিমের বাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন ভিকটিম তার ঘরেই আছে। তখন ভিকটিম ধর্ষণ পরবর্তী অন্তসত্বার ঘটনা প্রকাশ করেন। পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান তাকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন।
পরবর্তীতে ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়ে আদালতে যাওয়ার জন্য সাহায্য চান। ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় ভিকটিম আদালতে গিয়ে তার চাচা ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৩জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে ভিকটিম নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শংকায় দিনপাত করছেন। নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য ১৬ই মে ভিকটিম ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। সাধারণ ডায়েরি নং- ৬০৯।
সাধারণ ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলা করার কারনে তার চাচা আসামি নুরুল ইসলাম ও তার ভাই ফখরুল ইসলাম অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে ভিকটিম কে প্রানে হত্যা,গুম, অপহর করতে পারে।
এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার এসআই আশিক রাব্বানীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জিডির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে খোজ নিয়ে জানা যায় ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, তিনি ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।কিছু সুস্থ হওয়ায় আজ বাড়িতে চলে গেছেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার