গোলাপগঞ্জ সংবাদদাতা:
গোলাপগঞ্জের কাকেশ্বর নদী এখন ছড়ায় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এ নদীর একাংশ দখল করে মার্কেট ও দোকানপাঠ গড়ে তোলা হয়েছে। নদীর অপরাংশে বাজারের ব্যবসায়ী ও বাসা-বাড়ীর লোকজন ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। এভাবে দীর্ঘদিন থেকে দখল আর দুষণের ফলে নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢাকাদক্ষিণ বাজার পানিতে সয়লাভ হয়ে যায়।
দোকানগুলোতে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে যায় হাজার হাজার টাকার মালামাল। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম ক্ষোভ।
এদিকে নদীটি দখলমুক্ত করতে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,, থানা পুলিশ ও সাংবাদিক। এমন খবরে ছুটে আসেন উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও।
জানা যায়, উপজেলার ঢাকাদক্ষিণের বুক চিরে বয়ে গেছে কাকেশ্বর নদী। এ নদী দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করত ছোট-বড় নৌকা। গোলাপগঞ্জ ছাড়াও বিয়ানীবাজার, বড়লেখা, কুলাউড়া, সহ পসর্শবর্তী উপজেলা থেকে নৌকা যোগে মালামাল নিয়ে এসে এখানে ব্যবসা করতো লোকজন। ঢাকাদক্ষিণ বাজারের জমজমাট ব্যবসা বানিজ্য থাকার ফলে ঢাকাদক্ষিণকে বলা হতো গোলাপগঞ্জের রাজধানী। কিন্তু কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে আগের ঐতিহ্য। নদীটির প্রতি শ্যান দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় ভূমিখেকে চক্রের। কেউ নদীর পাশ দখল করে দোকানকোঠা নির্মাণ করেছে। কেউ করেছেন মার্কেট। ফলে নদীটি একেবারে সরু হয়ে পরিণত হয় ছড়ায়।
অপরদিকে খালের উপরাংশে বাজারের ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করে ফেলেছে। এতে নদীটির পানির প্রবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে পড়েছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢাকাদক্ষিণ বাজার পানিতে সয়লাভ হয়ে যায়। দোকানগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় নষ্ট হয়ে যায় হাজার হাজার টাকার মালামাল।
বাজারের ব্যবসায়ী গোলাম দস্তগীর খান ছামিন জানান, চলতি বন্যায় আমরা কম্পিউটারের দোকানে পানি ঢুকে মনিটর এবং জেনারেটর নষ্ট হয়ে গেছে। অতিষ্ঠ বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগের পর শনিবার ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি এলিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী সহ ১১ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। এসময় নদীটি তারা পরিদর্শন করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী রোববার বলেন, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় ২০২৩সালের ২ আগস্ট কাকেশ্বর নদীটি সার্ভে করে রিপোর্ট দিয়েছি। তখন প্রাথমিক ভাবে ৬শতক ১৮পয়েন্ট ভূমি দখল করে ২৫টি দোকানকোঠা নির্মাণের চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে জরিপ কাজ চলমান রয়েছে। দখল হওয়া ভূমির পরিমান আরও বাড়বে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি এলিম বলেন, নদী দখল করে যারা দোকানকোঠা নির্মাণ করেছেন তারা স্ব ইচ্ছায় খালের ওপর দোকানগুলো সরিয়ে নিতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, খাল দখল কোনভাবে মেনে নেয়া যাবেনা। যারা খাল দখল করে রেখেছেন তারা অবশ্যই সরে যেতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসন কোন ছাড় দিবেনা। উদ্ধার কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার