বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা:
ব্যক্তিগত সুরক্ষায় সামাজিকভাবে প্রভাবশালীরা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। তবে বৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি নানা অপরাধে জড়িতরা অবৈধ অস্ত্রও সংগ্রহে রাখেন। বিয়ানীবাজারে মোট অবৈধ অস্ত্রের সংখ্য জানেনা কেউ। বিয়ানীবাজারে বর্তমানে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ১৬১টি। এরমধ্যে গত ১৬ বছরে অর্থাৎ আওয়ামীলীগ সরকারের টানা মেয়াদে উপজেলায় মোট ৩২টি নতুন আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স করা হয়।রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে এসব বৈধ-অবৈধ অস্ত্র বেশী ব্যবহৃত হয়।
সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজারে বৈধ অস্ত্রের বেশীরভাগ ব্যবহারকারীই প্রবাসী। এরপরেই রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের স্থান। ৩য় অবস্থানে আছেন ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার লোকজন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মোট বৈধ অস্ত্রের মধ্যে মাত্র ৮২টি থানায় জমা দেয়া হয়। বাকী অস্ত্রগুলো নিজেদের কাছে রেখে দেন সংশ্লিষ্টরা। একই সূত্রের দাবী, বিয়ানীবাজারে গত দেড় যুগেও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে র্যাব ও পুলিশ একাধিক অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করলেও তাতে সাধারণ মানুষ নাখোশ।
এদিকে গত ১৫ বছরে বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বেসামরিক জনগণকে দেওয়া হয়েছে তাদের প্রদান করা লাইসেন্স স্থগিত করা হলো। এতে আরও বলা হয়, তাদের আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
জানা যায়, বিয়ানীবাজারে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ও অবৈধ উপায়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সর্বশেষ দেশব্যাপী আলোচিত চারখাইয়ের চিনি কান্ডের ঘটনায়ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র এখনো উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিয়ানীবাজারে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র আছে বলে দাবী করে আসছে উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মুখে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু করার তাগিদ দেন।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ অকিল উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, গত ৫ আগস্ট থানা পুলিশের ব্যবহৃত দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র খোয়া গেছে। যেগুলো এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, মৃত্যুবরণ, প্রবাসে অবস্থানসহ নানা কারণে কিছু বৈধ অস্ত্র পুলিশের কাছে জমা রয়েছে।
অপরদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নত হচ্ছে। শীঘ্রই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার