স্টাফ রিপোর্টার:
বিয়ানীবাজারের পল্লীতে নিজ ছেলের সাথে বিরোধের জের ধরে এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ পিতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তার জামিন না মঞ্জুর করেন আদালত। ছেলের পক্ষের পাল্টা মামলা এবং গ্রেফতারের ২৪ ঘন্টা পর একজন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে আদালতে সোপর্দ করার ঘটনায় এলাকায় ক্ষোব্দ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। পুলিশের এমন আচরণকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে ঘটনার তদন্ত দাবী করেছেন স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের
নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়, উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামে ছেলে জামিল আহমদকে বিগত দিনে জমিজমা বিক্রি করে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠান পিতা আজিজুল হক। ছেলে প্রবাস থেকে ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা সংসার গড়ে তোলে। সম্প্রতি সে আবার দেশে ফিরে ইউরোপ যাওয়ার জন্য পিতাকে জমিজমা বিক্রি করে তাকে টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেয়। এ নিয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছেলে জামিল আহমদ তার পক্ষের লোকজন নিয়ে পিতা আজিজুল হক ও তার অপর ছেলের উপর হামলা চালায়।
হামলায় পিতা ও ছেলে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় আজিজুল হক বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ১৭দিন পর এটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। ওই মামলায় মাত্র একজন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে প্রধান অসামীসহ অনেকেই পলাতক রয়েছেন।
এদিকে এই মামলার ২দিন পরই ছেলে জামিল আহমদের পক্ষের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে থানায় পাল্টা মামলা দায়ের করেন। এটি তদন্ত ছাড়াই দ্রুত মামলা হিসেবে রেকর্ড করে থানা পুলিশ। আশ্চর্যের বিষয়, মামলা রেকর্ড করার পরই প্রতিবন্ধী পিতা আজিজুল হককে গ্রেফতার করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহজাদা ফয়সল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হলেও শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আসামীকে দ্রুত আদালতে প্রেরণ করার অনুরোধ করা হলেও তাতে কোন কর্ণপাত করেননি তদন্ত কর্মকর্তা, এমন অভিযোগ করেছেন আজিজুলের পরিবারের সদস্যরা।
সার্বিক বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেব দুলাল ধর বলেন, মামলা হলে আসামীকে গ্রেফতার করতে হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
চারখাই ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পুলিশের এমন আচরণ ও হয়রানির পিছনে বড় অংকের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এধরনের আচরণ দেশের প্রবীণ নাগরিকদের অসম্মানে সামিল।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার