স্টাফ রিপোর্টার:
বিয়ানীবাজারে ব্রিটিশ বাংলাদেশী পঞ্চাশোর্ধ এক নাগরিককে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় আদালতের নির্দেশে প্রায় দুইমাস পর কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে ম্যাজিষ্টেটের উপস্থিতিতে পুলিশ তার লাশ উত্তোলন করে। এ সময় ম্যাজিষ্ট্রেট মাহবুবুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
নিহত জালাল উদ্দিন একই গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র। এ ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিহতের মেয়ে আপন চাচাসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, তার পিতা জালাল উদ্দিনের (৫৫) দেশে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। এজন্য ২০১৯ সাল থেকে তিনি দেশে বসবাসরত ছিলেন। গত ১৯ আগস্ট জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার বড় চাচা সুনাম উদ্দিনসহ পরিবারের লোকজন ঐদিন তার পিতাকে মারধর করেন। বিকেলেই মৃত্যুর পূর্বে তিনি বিষয়টি স্থানীয়দের অবহিত করেছেন। এদিকে, নিহতের সন্তানাদি প্রবাসে থাকায় বড় চাচা সুনাম উদ্দিন পুলিশকে না জানিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরদিন জানাজা শেষে লাশ দাফন করেন। পিতাকে মারধরের খবর পেয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর তিনি প্রাথমিকভাবে অভিযোগ করেন এবং পরে দেশে এসে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেন জোবায়দা জালাল। মামলায় নিহতের বড় ভাই সুনাম উদ্দিন (৬০), তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাবিয়া বেগম (৩৬), পালিত কন্যা মান্না বেগম (২২) ও একই এলাকার পাথারিপাড়া গ্রামের আব্দুল হাছিবকে অভিযুক্ত করেছেন।
মামলার বাদী জোবায়দা জালাল বলেন, বড় চাচা আমাদেরকে হার্ট এ্যাটাকে বাবার মৃত্যু কথা বলেছেন। পরে স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারলাম তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ততক্ষণে বাবার লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি বলেন, লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করলেই সব পরিস্কার হয়ে যাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আদালত থেকে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেয়ার পরও দ্রুত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।
মামলার প্রধান অভিযুক্ত সুনাম উদ্দিন বলেন, আমাদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ঘটনার দিন পুকুরে মাছ ধরা নিয়েও জালাল উদ্দিনের সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়। তবে, তার সাথে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, প্রবাসে ভাইয়ের সন্তানদের ধারণা থেকেই হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যুর কথা বলেছি।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। ইতিমধ্যে মামলা রেকর্ডসহ আদালতে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 998 বার