স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট মহানগরের পাঠানটুলা এলাকার নর্থ-ইস্ট সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া মতি মিয়ার (৬০) লাশ সিলেটের পথে রয়েছে। রবিবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে লাশ বাড়িতে আসার কথা রয়েছে। এরপর রাতেই দাফন সম্পন্ন হবে।
বিষয়টি জানিয়েছেন নিহত মতি মিয়ার ছেলে জুকু মিয়া। তিনি বলেন- ‘বাবার লাশ ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আসছে। রাতেই দাফন করা হবে।’
সিলেট মহানগরের পাঠানটুলা এলাকার নর্থ-ইস্ট সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ মতি মিয়া (৬০) নামের বৃদ্ধ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকাস্থ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন। তিনি সিলেট মহানগরের ঘাসিটুলা বেতের বাজার এলাকার মৃত মিছির আলীর ছেলে।
গত ২১ জানুয়ারি পাঠানটুলা এলাকার নর্থ-ইস্ট সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশনের পাশে ড্রেন সংস্কারের কাজ করাচ্ছিলো সিলেট সিটি করপোরেশন। আর.এন ইয়াকুব কন্সট্রাকশনের মাধ্যমে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। ওইদিন বিকাল সোয়া ৪টার দিকে এক শ্রমিক ফুয়েলিং স্টেশনের গাড়িতে গ্যাস দেওয়ার একটি মেশিনের কাছেই গ্র্যান্ডার মেশিন দিয়ে রড কাটছিলেন। এসময় গ্র্যান্ডার মেশিন থেকে বের হওয়া ছুটন্ত অগ্নিস্ফুলিঙ্গ গিয়ে স্টেশনটিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি তেলবাহী ট্রাকের নিচে পড়লে লরির পেছনের চাকাসহ পাইপে আগুন লেগে যায়। এ সময় লরির পাশে থাকা ড্রেনের কাজ করা ৫ শ্রমিক ও ফিলিং স্টেশনের এক কর্মচারী দগ্ধ হন। আশপাশের মানুষের মধ্যে এসময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তাঁরা ছোটাছুটি শুরু করেন। একপর্যায়ে তেলবাহী লরির চালক গাড়িটি চালিয়ে পাম্পের বাইরে নিয়ে যান। এসময় স্থানীয় ও আশপাশের মানুষ এগিয়ে গিয়ে পানি, বালু ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। খবর পেয়ে সিলেট ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিটও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
দগ্ধরা ছিলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের ঘাসিটুলা বেতের বাজার এলাকার জাফর আলীর ছেলে মনতাজ মিয়া (৩৫), একই এলাকার মঙ্গল মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৫), মতি মিয়ার ছেলে মো. আলম মিয়া (২৩), মিছির আলীর ছেলে মো. মতি মিয়া (৬০), রজনী চন্দ্র দাসের ছেলে সুভাষ দাস (৫৫)।
এদের মধ্যে মনতাজ মিয়া ও মতি মিয়ার (৬০) অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২২ জানুয়ারি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় মতি মিয়া মারা যান।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নর্থ-ইস্ট সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষের কারো বক্তব্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই সাংবাদিকদের উপস্থিতি ঘটলে ফিলিং স্টেশনটির মালিক ও ম্যানেজার আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে কর্মচারীদের কাছে তাদের ফোন নাম্বার চাওয়া হলেও মিলেনি। ফিলিংক স্টেশনের সাইনবোর্ডে দেওয়া ফোন নাম্বারে কল দিলেও কেউ রিসিভ করেননি।
এর আগে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সিলেট মহানগরের মীরাবাজার এলাকার বিরতি ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সে সময় পাম্পের ৯ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছিলেন। পরবর্তিতে দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ জন মারা যান।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার