Daily Jalalabadi

  সিলেট     মঙ্গলবার, ১৯শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে সিএনজি অটোরিকশায় ভয়ঙ্কর চক্র

admin

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
সিলেটে সিএনজি অটোরিকশায় ভয়ঙ্কর চক্র

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট নগরীর একটি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক আলবাব উদ্দিন। উপশহরস্থ রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে বন্দরবাজার যাওয়ার জন্য সিলেট আইন মহাবিদ্যালয়ের সামনে থেকে সিএনজি অটোরিকশায় ওঠেন তিনি। আগে থেকেই ওই অটোরিকশার পেছনের সিটে বসা ছিলেন দুই যাত্রী। অটোরিকশাটি সোবহানীঘাট পয়েন্টে গিয়ে বাম দিকে না গিয়ে নাইওরপুলের দিকে যেতে থাকে। তখন আলবাব উদ্দিন ভুল রাস্তায় অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চান চালকের কাছে। কিন্তু চালক তাতে কর্ণপাত না করে নাইওরপুল পয়েন্টে গিয়ে তাকে নামিয়ে দেন। অটোরিকশা থেকে নামার পর আলবাব দেখতে পান তার প্যান্টের পকেটে থাকা ৮০ হাজার টাকা নেই।

গত ২২ জানুয়ারি এ ঘটনার পর আলবাব উদ্দিন কোতোয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু ছিনতাইকারী চক্রের কোন সদস্য আটক কিংবা ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার হয়নি।

আলবাব উদ্দিনের মতো সিলেট নগরীতে প্রতিদিনই এরকম ছিনতাইর শিকার হচ্ছেন অনেকে। অটোরিকশা নিয়ে ওৎপেতে থাকা ছিনতাইকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে কেউ হারাচ্ছেন টাকা আর কেউ দামি মোবাইল। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অটোরিকশা নিয়ে এই চক্রের সদস্যরা প্রতিদিন ওৎপেতে থাকে। ছিনতাইর শিকার হওয়া বেশিরভাগ লোকজন বাড়তি ঝামেলার ভয়ে এসব ঘটনায় থানাপুলিশ করেন না। ছিনতাইর পর কেবল নিরবে সহে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর কদমতলী, উপশহর (সিলেট ল’ কলেজের সামনে), বন্দরবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, সুরমা মার্কেট পয়েন্ট, জেলরোড, ধোপাদিঘীরপূর্বপাড়, আম্বরখানা ও টিলাগড় এলাকায় ছিনতাইকারী চক্র অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের অটোরিকশায় আগে থেকেই ৩/৪ জন যাত্রী ওঠানো থাকে। পকেটে টাকা কিংবা দামি মোবাইল ফোন আছে এমন যাত্রীকে টার্গেট করে তারা। যাত্রী অটোরিকশার পাশে আসার পরই জানতে চায় তিনি কোথায় যাবেন। এরপর গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে অটোরিকশায় তুলে নেয়। গন্তব্যে যাওয়ার আগেই পেছনের সিটে বসা যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীরা টার্গেটকৃত যাত্রীর পকেট কেটে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে ভুল পথে অটোরিকশা ঘুরিয়ে যাত্রীকে মাঝপথে নেমে যেতে বাধ্য করে। অটোরিকশা থেকে নামার পর যাত্রীরা ছিনতাইর বিষয়টি টের পান। আবার কোন কোন চক্র অটোরিকশার ভেতরে অস্ত্র ধরে অথবা চেতনানাশক স্প্রে করে যাত্রীর সর্বস্ব লুটে তাকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রেন ও বাসে আসা যাত্রীদেরও টার্গেট করে ওই চক্রের সদস্যরা। সিলেট রেলওয়ে স্টেশন কিংবা কদমতলী বাস টার্মিনাল ও হুমায়ুন রশিদ চত্বর কাউন্টার থেকে যাত্রীদের তুলে রাস্তায় টাকা ও ফোন ছিনতাই করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

এরকম ঘটনা নগরীতে প্রতিদিন ঘটলেও ভ‚ক্তভোগীরা খুব কমই থানায় অভিযোগ করেন। যে কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় ছিনতাইকারী চক্র।

এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মাঝে মধ্যে এরকম ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসছে। এই চক্রকে সনাক্ত করে সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভ‚ক্তভোগীরা অভিযোগ দিতে দেরি করে ফেলেন। সাথে সাথে অভিযোগ পেলে অপরাধীদের আটক সহজ হতো।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার

শেয়ার করুন