স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটে গতকাল রাতে টানা তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর অন্তত ৫০টি এলাকা তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
শনিবার রাত ৯টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন। এর আধাঘণ্টা পূর্ব থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। ক্রমশ তা বাড়তে শুরু করে। একে একে তলিয়ে যেতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা। পানি ঢুকতে থাকে নগরবাসীর বাসা বাড়ি ও দোকানপাটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, কালীবাড়ি, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাঠানটুলা, নগরীর বাগবাড়ি, জিন্দাবাজার, শিবগঞ্জ, যতরপুর, সোবাহানীঘাট, তালতলা, উপশহর, দরগা মহল্লা, পীরমহল্লা, বাদামবাগিচা, চৌহাট্টা, রায়নগর, মেজরটিলা, শেখঘাট, বেতেরবাজারসহ অন্তত ৫০টি এলাকার বাসা-বাড়িতে পানি রয়েছে। এছাড়া মিরাবাজার সড়ক, বিমানবন্দরসড়ক, ওসমানী মেডিকেল থেকে বর্ণমালা পয়েন্ট, পাঠানটুলাসড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এতে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। সময়মতো বাসায় ফিরতে বিলম্ব হয়েছে নগরবাসীর। অনেকেরেই বাসায় অপ্রত্যাশিতভাবেই পানি প্রবেশ করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেকের।
কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে এমন জলাবদ্ধতার জন্য সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ক্ষোভও জানিয়েছেন অনেকে। বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও চলাচলের সড়কে জলাবদ্ধতার ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে লিখেছেন অনেক ক্ষোভের কথা।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক নিজের বাসায় পানি প্রবেশের চিত্র ধারণ করে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘‘আপনারা কিছু বলুন। বৃষ্টি আর বন্যার সঙ্গে আমার মোটামুটি অনেকদিনের সখ্য, পুরনো আত্মীয়তা তো ! তাই হয়তো আমাকে ছাড়তে চায়না।’
আরেকবাসিন্দা লিখেছেন, ‘ঘণ্টা দেড়ঘণ্টার বৃষ্টিয়ে উন্নয়নের বন্যায় ভাসছে সিলেট শহরের অধিকাংশ এলাকা।’ পোস্টের সঙ্গে নিজের বাসায় পানি উঠার চিত্র ধারণ করেও পোস্ট করেছেন।
তারেক চৌধুরী রাহেল নামের একজন পোস্ট করেছেন, বন্ধুর বাসায় পানি, পশ্চিম পীর মহল্লা, আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক।
সাংবাদিক শ্যামানন্দ শ্যামল লিখেছেন, ‘ভুতুড়ে অবস্থা সিলেটে। আবারো বৃষ্টি, জিন্দাবাজার রাজা ম্যানশনসহ শহরের অনেক এলাকাই পানির নিচে।’
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ‘এক সপ্তাহে দুই বার উঠল পানির ধাক্কা, ভেবে উঠতে পারছি না কি করবো। খুবি টেনশনে আছি।’
ইমরান আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, ‘অপরিকল্পিত ড্রেন সিস্টেম ও লোক দেখানো উন্নয়ন সিলেটবাসীকে ভাসিয়ে দিয়েছে। বিগত মেয়র সাহেব হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নই করে গেলেন যা অভিশাপে রূপ নিয়েছে। এই জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পেতে হলে আবার ড্রেনগুলো ভেঙে উন্মুক্ত করতে হবে, যাতে সহজে পরিষ্কার করা যায়।’
সিলেট সিটি করপোশেনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর রাতে লিখেছেন, ‘বৃষ্টির পানি নামার জন্য কাজ করছে সিসিকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।’
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার