স্টাফ রিপোর্টার:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার (হৃৎস্পন্দন তৈরির যন্ত্র) বসানো হয়েছে। রোববার বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। পেসমেকার বসানোর পর কেমন আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
রোববার পেসমেকার বসানোর পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। এমনকি বিএনপি নেতারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
সে সময় তিনি জানান, তার হৃদরোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে ব্লক ছিল, একটা স্টেন্টও (রিং) লাগানো ছিল। সবকিছু পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড তার হার্টে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে বিশেষায়িত কক্ষে (ক্যাথল্যাবে) নিয়ে পেসমেকার স্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা না গেলে, এই মুহূর্তে তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করলে তা বিব্রতকর হয়ে যেতে পারে।
জাহিদ হোসেন বলেন, পেসমেকার বসানোর পর এখন ৭২ ঘণ্টার জন্য খালেদা জিয়াকে সিসিইউ সুবিধা দিয়ে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তার হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। দুটি সারানো হয়েছে। আমি বারবার বলেছিলাম যে কোনো সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে। তার হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, গত শুক্রবার রাতে সেই অঘটনটিই ঘটতে যাচ্ছিল। সেই অবস্থায় তার চিকিৎসকেরা দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর এবং চিকিৎসা শুরু করেন। আজ প্রথমে অস্থায়ী পেসমেকার এবং পরবর্তীতে স্থায়ী পেসমেকার লাগানো হয়।
এর আগে শনিবার রাতে হঠাৎ খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে দ্রুত ভর্তি করা হয় এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে। তাৎক্ষণিক তার ফুসফুসের পানি অপসারণ করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলছে। মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক একিউএম মহসিনসহ ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
এছাড়া লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ চিকিৎসক জোবাইদা রহমানসহ যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এ বোর্ডে যুক্ত আছেন। এর আগে চলতি বছরের ২ মে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় চিকিৎসকরা তাকে সিসিইউতে রেখে দুদিন চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার