স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটে একদিনে এক যুবক ও এক তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৭ মার্চ) সিলেট মহানগরে একজন ও অপরজন জেলার গোয়াইনঘাটে আত্মহত্যা করেছেন।
আত্মহননকারী যুবকের জামার পকেটে পাওয়া যায় একটি চিরকুট। এতে লেখা ছিলো বুকভরা অনেক অভিমানী কথা। কাউকে দোষারোপ না করে নিজেকেই অপরাধী বানিয়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেওয়া সেই যুবকের আত্মহত্যার কারণ খুঁজছে পুলিশ।
অপরদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে- তরুণীর আত্মহত্যার কারণ প্রেমঘটিত। তবে এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত বলতে পারছে না পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
জানা যায়, সোমবার শেষ বিকেলে সিলেট মহানগরের ভাতালিয়ায় শাহীন আহম্মদ (৩৫) নামের এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানাধীন লামাবাজার ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
শাহীন ভাতালিয়ার ৫০ নং বাসার মৃত হিরণ মিয়ার ছেলে। লাশ উদ্ধারের সময় জামার পকেটে একটি চিরকুট পায় পুলিশ। এতে লেখা ছিলো- ‘আমি শাহীন আহমদ। নিজ ইচ্ছায় কাহার উপর রাগ বা গোস্বা করিয়া আত্মহত্যা করিনাই। আমার আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়। পুলিশ প্রশাসনও কোনো কিছু তদন্ত করা লাগবে না। যদি পারা যায় পোস্ট মর্টেম ছাড়া আমাকে আমার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয় যেন। ইতি সবার অবাধ্য শাহীন আহমদ।’
চিরকুটটিতে আরও লেখা- ‘অনেক কষ্ট দিয়েছি আমার মায়ের সমান খালাকে। খালা মাফ করে দিও আমাকে। খালার কাছে আমি অনেক ঋণি।’
লাশ উদ্ধারের পর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন- ইফতারের কিছুক্ষণ আগে পরিবারের লোকজন শাহীনের দেহ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ওসি বলেন- প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। এছাড়াও চিরকুটের লেখা শাহীনের কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ঘটনার আগে সোমবার দুপুরে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে রোজিনা আক্তার রিমা নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিজ বসতঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এই তরুণী।
রিমা উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের ছৈলাখেল নবম খণ্ড গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রহিমের মেয়ে ও ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে পরিবারের লোকজনের অগোচরে নিজের বসতঘরের ফ্যানের সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন রিমা। তার দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পরিবারের লোকজন পুলিশে খবর দিলে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
প্রেম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রিমা আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে. এম. নজরুল বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত সঠিকভাবে বলা যাবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার