স্টাফ রিপোর্টার:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ভোটের মাঠ এখনো নিরুত্তাপ। বিএনপি অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের জন্য ভোটের মাঠ অনেকটা ফাঁকা। সিলেটে জাতীয় পার্টি ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য বাকি দলগুলোর সাংগঠনিক তেমন অবস্থানই নেই। ফলে ভোট নিয়ে সিলেটের মানুষের মধ্যে খুব একটা উচ্ছ¡াস নেই। তবে পূণ্যভ‚মি সিলেট থেকেই সারাদেশে নির্বাচনী ঝড় তুলতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য প্রতিবারের ন্যায় এবারও সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২০ ডিসেম্বর সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে শেখ হাসিনার সমাবেশে লাখে মানুষের জমায়েত করতে চায় দলটি। এজন্য বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা করে কেন্দ্রীয় নেতারা দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
বিভাগের প্রত্যেক আসনের নৌকার প্রার্থীকে অন্তত ১০ হাজার লোক নিয়ে সমাবেশে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহৎ সমাবেশ করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
সিলেটের জনসমাবেশ দেখে যাতে নির্বাচন নিয়ে সারাদেশের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জেগে ওঠে সেটার সফল বাস্তবায়ন ঘটাতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করে সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর ঘোষনা দেওয়ার পর থেকে সিলেটের নেতাকর্মীরা চাঙা হয়ে ওঠেন। জনসভার জন্য এবার স্থান নির্ধারণ করা হয় সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ। সমাবেশ সফলে গত ১৩ ডিসেম্বর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ প্রায় একডজন কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে সিলেটের একটি কনভেনশন হলে বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিলেট বিভাগের চার জেলার আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ২০ ডিসেম্বর আলীয় মাদ্রাসা মাঠের জনসমাবেশে স্মরণকালের বৃহৎ করার নির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সভায় বিভাগের ১৯টি আসনের সকল নৌকার প্রার্থীকে অন্তত ১০ হাজার করে লোক নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়াা হয়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট আগমনকে কেন্দ্র করে চাঙা হয়ে ওঠেছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। চলছে দফায় দফায় সভা ও প্রচার মিছিল। আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটবর্জনকারী বিএনপি ও জামায়াত চাইবে ভোটার উপস্থিতি কমাতে। তাদের এই ষড়যন্ত্র নস্যাত করে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে শেখ হাসিনার প্রথম নির্বাচনী জনসভা জনসমূদ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে সিলেটের জনসমূদ্র দেখে দেশের সকল জেলায় দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। তারা যাতে সপরিবারে উৎসবমূখর পরিবেশে ভোট দিতে চায়। ওই জনসভায় সিলেট বিভাগের নৌকা এবং কোন আসন জোটের শরীক কোন দলকে ছেড়ে দেওয়া হলে ওই আসনের প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তাদের পক্ষে সিলেটবাসীর কাছে ভোটও চাইবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সফর ও জনসভা প্রসঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ জানান, শেখ হাসিনা প্রতিবারই পূণ্যভ‚মি সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট আগমনের খবরে শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দিপনা দেখা দিয়েছে। সিলেটের এই জনসভার জনসমাবেশ দেখে সারাদেশে নির্বাচনী ঝড় আরও বেগবান হবে বলে আমরা আশাবাদী।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, আলীয়া মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় স্মরণকালে বৃহৎ জনসমাবেশ করার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিভাগের প্রতিটি জেলা উপজেলা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা সমাবেশে এসে যোগ দেবেন। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে। নির্বাচনী ট্রেন থেকে নেমে ভুল করেছে বুঝতে পেরে বিএনপি-জামায়াত ৭ জানুয়ারি ভোটার উপস্থিতি কমানোর ষড়যন্ত্র করছে। তারা আগুন সন্ত্রাস করে মানুষের মধ্যে ভীতিসঞ্চারের চেষ্টা করছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সমাবেশে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি দেখে তাদের মাথা আরেকবার খারাপ হবে। সিলেট থেকে সারাদেশে নির্বাচনী উৎসবের জোয়ার ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 999 বার